চার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হয়েছে আজ রোববার (৩ মার্চ)। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছেন। এবার ডিসি সম্মেলন শেষ হবে ৬ মার্চ (বুধবার)।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসক সম্মেলন— যা সচরাচর ‘ডিসি সম্মেলন’ নামেই বহুল পরিচিত। বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ প্রেক্ষাপটে নতুন সরকারের লক্ষ্য ও করণীয় সম্পর্কে ধারণা দিতেই এ সম্মেলন চলবে ৬ মার্চ (বুধবার) পর্যন্ত। এবারের সম্মেলনে ৫৬টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, কার্যালয় ও সংস্থা সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রায় ৩৫০টি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। গত বছর এই প্রস্তাবের সংখ্যা ছিল ২৪৫টি। ফলে গত বছরের চেয়ে এবার একশর বেশি প্রস্তাব করেছেন ডিসিরা।
সম্মেলনে এবার প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার কমিশনারের সঙ্গেও ডিসিরা বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা।
সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ডিসিদের আলোচ্য সূচিতে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো ও কৃষিজমি নষ্ট না করা, জেলা পর্যায়ে পর্যটন বিকাশে উদ্যোগ নেওয়া, পরিবেশদূষণ রোধে ব্যবস্থা, জেলা পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ, সেচ মৌসুমে জ্বালানি সরবরাহ যথাযথ রাখা, শিক্ষায় নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে মনিটরিং জোরদার, প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় পর্যায়ে মনিটরিং জোরদার ও রাজস্ব বাড়ানোয় সহযোগিতাসহ ইত্যাদি বিষয় যুক্ত থাকছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখাও থাকছে এবারের ডিসি সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উদ্বোধনের পর বিকাল ২টা থেকে কার্য-অধিবেশন শুরু হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। কার্য-অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রস্তাব দেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা সাধারণত তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাবও তুলে ধরেন। কার্য-অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এবার সম্মেলনে আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূমি ব্যবস্থাপনা; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন; স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম জোরদারকরণ; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।