ডেঙ্গু হয়ে উঠেছে এখন সারা বছরের রোগ। বসন্তের শুরুতেই যেভাবে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে মনে করা হচ্ছে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হবে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে অনেক।
এই তিন মাসের পরিসংখ্যান দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে খারাপ হতে পারে। ২৩ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬২০ জন, যার মধ্যে প্রাণ গেছে ২২ জনের। এর আগে কখনোই বছরের প্রথম তিন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এত মানুষের মৃত্যু হয়নি।
ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকায় হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বৃহস্পতিবার বলেন “এখনই যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাতে এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থাপনার কোনো পরিবর্তন হয়নি। গত বছরের চেয়ে এবার রোগী বেশি হওয়ার খুবই আশঙ্কা আছে।
২০১৯ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে যে রোগী পাওয়া যাচ্ছে, তা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ; মৃত্যুও অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কেবল মার্চ মাসের রোগী হিসাব করলেও অতীতের যে কোনো সময়ের বেশি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর ও চাঁদপুরে এইডিস মশার উপস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই পরিদর্শনে তিনি দেখেছেন ওইসব জায়গায় এইডিস মশার ঘনত্ব আগের চেয়ে অনেক বেশি।
তিনি বলেন, “এবার ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু বেশি ছড়ানোর আশঙ্কা আছে। ওইসব জায়গায় মশার ঘনত্ব, ওই এলাকার পরিবেশ এবং সেসব এলাকায় এখনও ডেঙ্গু আছে। সবমিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হবে।