চীনা সরকারের আদেশ মানতে চীনে নিজস্ব অ্যাপ স্টোর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ ও থ্রেডস অ্যাপ সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল। যদিও শুধুমাত্র অ্যাপ স্টোর চীনা শাখায় এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। অন্যান্য অঞ্চলের ব্যবহারকারীরা এখনো এই দুটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারছেন।
অ্যাপলের মুখপাত্র গতকাল (শুক্রবার) সিএনএন-কে বলেন, “চীনের সাইবারস্পেস কর্তৃপক্ষ তাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের ভিত্তিতে দেশটির স্টোরফ্রন্ট থেকে অ্যাপগুলি সরানোর নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু অ্যাপগুলি অন্যান্য সমস্ত স্টোরফ্রন্টে ডাউনলোডের জন্য রয়েছে; যেখানে সেগুলো পাওয়া যেত।”
এদিকে মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ও চীনের সাইবারস্পেস প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কেউই এখনো এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। ফলে এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যের আসল কারণ বোঝা যাচ্ছে না।
এই বিষয়ে বেইজিং ভিত্তিক ইনভেস্টমেন্ট অ্যাডভাইজরি বিডিএ চায়নার চেয়ারম্যান ডানক্যান ক্লার্ক বলেন, “অ্যাপল কর্তৃক অ্যাপগুলি সরিয়ে ফেলা চীনে এবং এর বাইরে ইতোমধ্যে পৃথক প্রযুক্তি বিশ্বের মধ্যে আরও বিভাজন বৃদ্ধি করবে।”
ক্লার্ক আরও বলেন, “এটি চীনে থাকা গ্রাহকদের ও ব্যবসায়ীদের পরিবার, বন্ধু বা বিদেশি গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। এমনকি যদি তারা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে ভিপিএন ব্যবহার করেন, তবে তা সময়ের সাথে সাথে অপ্রচলিত হয়ে যাবে এবং আপডেট করার প্রয়োজন হবে।”
কোম্পানিটি চীনে ব্যবসা হারানোর পেছনে জাতীয়তাবাদ, জটিল অর্থনীতি ও ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতাকে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আইডিসির মতে, হুয়াওয়ে, শাওমি, অপ্পো/ওয়ান প্লাসসহ অন্যান্য চীনা ব্র্যান্ডের ব্যবসা বৃদ্ধি সম্ভবত অব্যাহত থাকবে। একইসাথে চীনা ভোক্তারা যারা একসময় অ্যাপলকে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রাখতেন তারা এখন দেশীয় নানা ব্র্যান্ডের দিকে ঝুঁকছেন।
আইফোন বিক্রিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই চীনের অবস্থান। সেক্ষেত্রে দেশটিতে বিক্রি আরও বৃদ্ধি করতে অ্যাপলের পক্ষ থেকে আরও অফার প্রদান করা হচ্ছে।
চীনা সরকার গত বছর ঘোষণা করেছিল, তাদের দেশে ব্যবহৃত সমস্ত অ্যাপকে সরকারি নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। যারা এই নিয়ম মানবে না তাদের অপসারিত করা হবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে মার্চ মাসের শেষ পর্যন্ত নিবন্ধন সম্পূর্ণ করার সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। এরপর গত ১ এপ্রিল থেকে এই আইন কার্যকর হয়।