নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও আলোকিত সীমান্ত গড়তে নওগাঁর ধামইরহাটে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষাী বাহিনীর (বিএসএফ) ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) নওগাঁ সীমান্তের খয়েরবাড়ি মাঠ নামক স্থানে বিজিবির পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি) এবং বিএসএফ ১৩৭ ব্যাটালিয়ন, পতিরামের কমান্ডার পর্যায়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির ১৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের (১৪ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন। অপরদিকে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট বিএসএফ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিএসএফ ১৩৭ ব্যাটালিয়ন, পতিরামের কমান্ড্যান্ট শুকভীর ধাংগার।
বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বজার রাখতে উভয় অধিনায়ক একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বৈঠক শেষে দুই দেশের শিশুদের মাঝে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সীমান্তবর্তী খয়েরবাড়ী গ্রামে উৎসবের সাজে সেজেছিল।
উল্লেখ্য, নওগাঁ সীমান্তের খয়েরবাড়ি এবং ভারতের ভুলকিপুর অধিক চোরাচালানপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। বিজিবি এবং বিএসএফ ক্যাম্প হতে সীমান্তবর্তী এই গ্রাম দুটি কিছুটা দূরে অবস্থিত হওয়ায় এবং সীমান্তের এ অংশে ভারতের কোনো কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় দুষ্কৃতকারীরা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকাকে মাদকপাচার ও চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এলাকাটিকে মাদক ও চোরাচালান মুক্ত করতে বিজিবি-বিএসএফের অধিনায়ক পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা, কৌশল নির্ধারণ এবং সে বিষয়ে সহযোগিতার ভিত্তিতে কিছু কার্যক্রম গ্রহণের ব্যাপারে যৌথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিজিবি ও বিএসএফের এ ব্যতিক্রমী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ বিজিবি পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন জানান, বৈঠকে এবারের বিষয় ছিল আলোকিত গ্রাম, আলোকিত মানুষ, আলোকিত সীমান্ত। আলোকিত সীমান্ত বিনির্মাণে একসঙ্গে আলোর পথ, নিরাপদ সীমান্ত, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ, সীমান্ত আইন লঙ্ঘন, চোরাচালান প্রতিরোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও দুই বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয় বৈঠকে।
ভবিষ্যতে মাদক ও চোরাচালানমুক্ত আলোকিত সীমান্ত গড়তে উভয় দেশের সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে আরো বড় পরিসরে বিভিন্ন খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার দৃঢ অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয় এবং সীমান্তবর্তী জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত আলোকিত সীমান্ত গড়তে উভয় অধিনায়ক একসঙ্গে কাজের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।