আন্তর্জাতিক

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে ফিলিস্তিনপন্থি ছাত্র বিক্ষোভ

মোহনা অনলাইন

ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এমনকি পাশাপাশি তা ছড়িয়ে পড়ছে ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায়। গত বুধবার থেকে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস ও অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসেও একইভাবে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে।

গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহতের প্রতিবাদে এবং ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিক্ষোভ থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নজিরবিহীন এই ছাত্র বিক্ষোভ দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলনীতি বদলে দিতে পারে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রই ইহুদিবাদী দেশটির বড় পৃষ্ঠপোষক, অস্ত্রদাতা এবং আর্থিক সহায়তাকারী। তবে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনে তাতে পরিবর্তন আসতে পারে।

ছাত্র বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। এর পর থেকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও ছড়িয়ে পড়ে। লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া এবং আটলান্টায় বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলন চলছে ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশেও।

দ্য সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কে শত শত শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে শিবির তৈরি করে অবস্থান নিয়েছে। এসব শিবিরে ‘বর্ণবাদীদের জন্য কোনো বিনিয়োগ নয়’ লেখা ব্যানারও টানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির একজন শিক্ষার্থী গ্যাবি আওসে বলেন, ‘ফিলিস্তিনপন্থি যুব সমাবেশে লোকজনের উপস্থিতি দেখতে খুব ভালো লাগছে। তরুণ-তরুণীরারা কিছু করে দেখাচ্ছে যাতে ইসরায়েলি আধিপত্যবাদী শক্তির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্পর্ককে দায়বদ্ধতার আওতায় আনা যায়।’

গতকাল শনিবার সকালে বোস্টনে দাঙ্গা পুলিশ নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস থেকে একটি শিবির উঠিয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অবজ্ঞাসূচক ‘বু’ শব্দ করার পাশাপাশি জোরে চিৎকার করতে থাকে।

ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ আঁচ করতে পেরে গত রবিবার থেকে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ শুধু পরিচয়পত্রধারীদের জন্য ক্যাম্পাস উন্মুক্ত করে দেয়। পরে কর্তৃপক্ষ জানায়, অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভের তাঁবু স্থাপন করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। তবে সেই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে তাঁবু স্থাপন করেছেন ফিলিস্তিনপন্থিরা।

এদিকে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব বিক্ষোভকে ‘ইহুদি-বিদ্বেষ’ হিসেবে চিহ্নিত করে নিন্দা জানিয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা এই অভিযোগ বাতিল করে দিয়ে বলেছে, এসব বিক্ষোভে অনেক ইহুদি কর্মী-সমর্থকও যোগ দিয়েছেন।

বিক্ষোভে জনতা ‘ফিলিস্তিন মুক্ত কর’ এবং ‘ইসরায়েলকে বয়কট কর’ স্লোগান দেয়। এ ছাড়া শনিবার বিকেলে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে শত শত লোক জড়ো হন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button