আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে ৯ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

পুলিশ প্রশাসানের ব্যাপক তৎপরাতার মধ্যেও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছেন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলনের জেড় ধরে এ পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৯ শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

২৮ এপ্রিল রোববারেই যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ২৭৫ জন শিক্ষার্থীকে।

দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থী নেতাদের মধ্যে মতবিরোধের জেরে গতকাল রোববার পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

যদিও শুরুর দিকে মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিবেচনায় সে আন্দোলনে আপত্তি জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা এমন তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী তাঁবু গেড়ে থাকা শুরু করলেন তাতেও বাধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু আন্দোলন শুরুর পর থেকে ক্যাম্পাসে আসা বন্ধ করে দেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদি ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

ইদানিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ইহুদি শিক্ষার্থীদের একাংশ জানান, ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ এবং আন্দোলনকারীদের সার্বক্ষণিক অবস্থানের কারণে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে ভয় পাচ্ছেন। তারা অভিযোগ জানানোর পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্দোলন গুটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় আন্দোলনকারীদের, সোমবার পুলিশ এসে ক্যাম্পাস থেকে অস্থায়ী তাঁবুগুলো সরানো শুরু করলে পুলিশের সঙ্গেও হাতাহাতিতে জড়ান শিক্ষার্থীরা। সে সময় বেশ কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এছাড়াও সম্প্রতি বোস্টনের নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের তাঁবু উচ্ছেদ করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অন্তত ১০০ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে নর্থইস্টার্ন প্রশাসন জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন ‘সম্পূর্ণ নিরাপদ’ এবং ক্যাম্পাসের যাবতীয় কার্যক্রম ফের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেছে।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আরও জানিয়েছে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কয়েকবার ইহুদিদের হত্যার দাবিতে স্লোগান দেওয়ায় প্রশাসন এই অভিযান চালানোর অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে। অন্যদিকে পাল্টা এক্সবার্তায় আন্দোলনকারীরা প্রশাসনের এই অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

গেল বছরের ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে নির্বিচারের গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যা করে হামাস। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জনকে। তাৎক্ষণিক জবাবে সেই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

চলমান এই অভিযানে মূলত ইতিমধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। যাদের অধিকাংশই শিশু, নারী ও বেসামরিক লোকজন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button