আন্তর্জাতিকবিনোদন

কুয়ালালামপুরে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এর বর্ণিল উদযাপন

মোহনা অনলাইন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশন বিপুল উৎসাহ – উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২ মে ২০২৪ ) রাজধানী কুয়ালালামপুরের ক্রাফট কমপ্লেক্সে মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সুমধুর গান, দৃষ্টিনন্দন নাচ, ফ্যাশন শো, মুকাভিনয়, একক অভিনয় এবং ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবারের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় এ বর্ণিল আয়োজনে। এছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

হাই কমিশনার মোঃ শামীম আহসান ও তাঁর সহধর্মিণী পেন্ডোরা চৌধুরী আমন্ত্রিত অতিথিদের বৈশাখের উত্তরীয় দিয়ে তাদের উষ্ণভাবে বরণ করে নেন এবং সকলের সাথে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মালয়েশিয়ার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মহাপরিচালক মিজ জুবাইদাহ বিনতি মুখতার অনুষ্ঠানে “গেস্ট অব অনার” হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কুয়ালালামপুরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, শতাধিক কূটনীতিক ছাড়াও শিক্ষাবিদ, বাংলাদেশে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সে অংশ নেয়া অবসরপ্রাপ্ত আর্মি অফিসার, কুয়ালালামপুরে প্রশিক্ষণে আসা বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির মহাপরিচালকসহ ২৭ জন প্রশিক্ষনার্থী/ প্রশিক্ষক , প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ , সাংবাদিক এবং হাই কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কুয়ালালামপুরে ক্রাফট কমপ্লেক্সে আয়োজিত বাংলার ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিদেশি অতিথিসহ দূতাবাস পরিবার এর সদস্যরা বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে অংশগ্রহণ করেন।

হাই কমিশনার মোঃ শামীম আহসান তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাঙালি সংস্কৃতির দীর্ঘ ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনীতিক উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মানবজাতির বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (Intangible Cultural Heritage) হিসেবে স্বীকৃতি দানের কথা উল্লেখ করে বলেন যে এটি বাংলাদেশের নববর্ষ উদযাপনে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য নববর্ষ আরো সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। হাই কমিশনার তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পহেলা বৈশাখকে সরকারী ছুটি ঘোষণা ও দিনটি সাড়ম্বরে উদযাপনের কথা উল্লেখ করে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আলোচনা সভার পরে প্রবাসী বাংলাদেশী ও মালয়েশিয়ার শিল্পী ও হাই কমিশন পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অতিথিদের মুগ্ধ করে। নববর্ষ উপলক্ষে হাইকমিশন কর্তৃক একটি রঙ্গিন প্রকাশনা অতিথিদের মাঝে বিতরন করা হয় যা উপস্থিত সকলের মাঝে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ঐতিহ্যগত দিকগুলো ফুটিয়ে তোলে।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে ঐতিহ্যবাহী রকমারী বাংলাদেশী খাবার এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত ‘রস’ মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়। অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে স্থাপিত বাংলাদেশ কর্নার, পালকি, মেহেদী, সাজঘর, ফুচকা, পান ও ঝাল-মুড়ির স্টল, পিঠা ঘর উপস্থিত বিদেশী অতিথিবৃন্দের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। বিভিন্ন স্টলে নারীদের প্লাটফর্ম উইমেন এন্ড ই – কমার্স মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার ও পণ্য প্রদর্শন করে।

এছাড়া বাংলাদেশি প্রখ্যাত কোম্পানি প্রাণ ও মৈত্রী তাদের পণ্য প্রদর্শন করে এবং ন্যাশনাল ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক রেমিট্যান্স হাউজ বুথ স্থাপনের মাধ্যমে তাদের সেবা প্রবাসীদের অবহিত করে। অতিথিদের মৈত্রী কোম্পানির পক্ষ থেকে কৃষি পণ্য উপহার দেয়া হয়।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ক্রাফট কমপ্লেক্স-কে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অনেক অনুসঙ্গ দিয়ে সুসজ্জিত করা হয় যা সহজেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং সকলের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরী করে ।

উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরসমূহ বন্ধ থাকায় বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানটি ১৪ এপ্রিলের পরিবর্তে ২ মে উদযাপিত হয়।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button