২১ জুন বছরের সবচেয়ে দীর্ঘতম দিন। সৌরজগতের নিয়ম অনুযায়ী পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরার সময় একদিকে একটু হেলে থাকে। ফলে কখনো উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছে আসে, কখনো দক্ষিণ গোলার্ধ। আর আজ উত্তর গোলার্ধ সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকায়, আজকের দিনটি সবচেয়ে বড়।
ক্যালেন্ডারের হিসেবে ২১ জুন ‘সামার সলস্টিস’। ল্যাটিন শব্দ solctice-এর অর্থ sol মানে সূর্য ও sisterer মানে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা। কেউ একে বলে কর্কটক্রান্তি দিবস, কেউ বলে অয়ন দিবস। ইংরেজিতে একে পালন করা হয় সামার সলস্টিস ডে হিসেবে। এদিন সূর্য আকাশে থাকবে মোট ১৩ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট। সলস্টিস ল্যাটিন শব্দ।
২১ জুন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি আসে। সূর্যকে ২১ জুন মধ্যগগনে, প্রায় মাথার উপরে দেখা যায়। ২০ থেকে ২৩ জুনের মধ্যে ‘সামার সলস্টিস’ হয়ে থাকে। ২১ জুন মানুষ নিজের ছায়াও দেখতে পায় না। যখন সূর্য ঠিক কর্কটক্রান্তি রেখার উপর থাকে, তখন ছায়া কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এটি প্রকৃতির এক বিস্ময়কর ঘটনা।
পৃথিবীর বার্ষিক গতি চলতে থাকে। যার কারণে পৃথিবীর ঋতু পরিবর্তিত হয়। এই বার্ষিক গতির কারণে, পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ২১ জুন। একইসাথে উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট রাতও ২১ জুন। তবে দক্ষিণ গোলার্ধে এদিনই দিন সবচেয়ে ছোট ও রাত সবচেয়ে বড়।
সূর্য এই সময় কর্কটক্রান্তি বৃত্তে অবস্থান করে। ক্রান্তি বৃত্তে সূর্যের এই প্রান্তিক অবস্থান বিন্দুকে বলা হয় উত্তর অয়নায়ন। দক্ষিণ গোলার্ধে এখন থাকে ঠিক এর বিপরীত অবস্থা। আর এরপর থেকেই ক্রমশ দিন ছোট হতে থাকে, আর বড় হতে থাকে রাত। পরবর্তীতে ২৩ সেপ্টেম্বর সূর্য আবার অবস্থান নেয় বিষুব বৃত্তের বিন্দুতে একে বলা হয় জলবিষুব বিন্দু। এই দিন পুনরায় পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান হয়ে যায়।
অন্যদিকে আবার ২১ ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তি রেখার ওপর অবস্থান করায় এবং উত্তর মেরু সূর্য থেকে কিছুটা দূরে হেলে থাকায় উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম রাত্রি ও ক্ষুদ্রতম দিন হয়ে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনে পালিত হয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান। প্রাচীনকালে ইউরোপের মানুষ এ দিনটি থেকে তাদের বছর শুরু করত বলে জানা যায়। মূলত গ্রীষ্মের সময় যে দিনটি সবচেয়ে বড় হতো সেই দিনের পর থেকে ফসল লাগানো এবং আগের ফসল কাটত তারা।