আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টায় ইরানি হুমকি, নিরাপত্তা বাড়ায় সিক্রেট সার্ভিস

মোহনা অনলাইন

সম্প্রতি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হত্যাচেষ্টার শিকার হন। হামলার শিকার হওয়ার পর বড় ধরনের কয়েকটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসকে।

মূলত ট্রাম্পকে হত্যা করতে ইরানের পরিকল্পনা রয়েছে, এমন খবর জানার পর সাবেক এই প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার (১৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

নির্বাচনী সমাবেশে হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। ট্রাম্পকে হত্যা করতে ইরানি পরিকল্পনা রয়েছে, এমন খবর জানার পর তাঁর নিরাপত্তা জোরদার করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের কর্মকর্তারা এ কথা জানান।

গত শনিবার সন্ধ্যায় পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার এলাকায় ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে হামলা হয়। আহত হন ট্রাম্প। তাঁর ডান কানের ওপরের অংশে ফুটো হয়ে যায়। নিহত হন দুজন। তবে এ ঘটনার সঙ্গে ট্রাম্পকে হত্যা করার ইরানি পরিকল্পনার কোনো যোগসূত্র আছে কি না, সেটা নিশ্চিত করতে পারেননি কর্মকর্তারা।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে যদি ট্রাম্পের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েই থাকে, তাহলে এই হামলা কীভাবে হলো? হামলাকারী ২০ বছরের তরুণ টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস কীভাবে ট্রাম্পের সমাবেশমঞ্চের এত কাছে রাইফেল হাতে চলে গিয়ে গুলি চালাতে পারলেন?

কর্মকর্তারা বলছেন, কথিত ওই ইরানি চক্রান্ত এবং গত শনিবার পেনসিলভেনিয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্টকে হত্যার চেষ্টার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে তা এখনও জানা নেই।

তবে আগে থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে তাতে আরও কিছু প্রশ্ন সামনে এসেছে যে, ২০ বছর বয়সী হামলাকারী টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস কীভাবে সমাবেশের পাশের একটি ভবনের ছাদে আরোহণ করতে এবং ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর জন্য যথেষ্ট কাছাকাছিও পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তার মতে, মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস এবং ট্রাম্পের প্রচারণা দলকে ইরানি এই হুমকির বিষয়ে অবহিত করা হয়েছিল এবং এর ফলে ট্রাম্পের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছিল।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি মিশন অবশ্য এই প্রতিবেদনটিকে ‘অপ্রমাণিত এবং বিদ্বেষপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, ট্রাম্প ‘একজন অপরাধী যাকে অবশ্যই আইনের আদালতে বিচার করতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে’।

গোয়েন্দা সূত্র বিবিসির মার্কিন সংবাদ অংশীদার সিবিএসকে জানিয়েছে, ইরানের হুমকির জবাবে সিক্রেট সার্ভিস গত জুন মাসে ট্রাম্পের নিরাপত্তা জোরদার করে। এর মধ্যে অতিরিক্ত কাউন্টার-অ্যাসল্ট এবং কাউন্টার-স্নাইপার এজেন্ট মোতায়েনের পাশাপাশি ড্রোন এবং রোবোটিক কুকুর ব্যবহারের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সিবিএস রিপোর্ট করেছে, ইরানের সম্ভাব্য অভিযানের বিশদ বিবরণ ‘গোয়েন্দা তথ্যের’ মাধ্যমে পাওয়া গেছে এবং ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনাটি এমন এক সময়ে হয়েছে যখন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের বিষয়ে ‘ইরানের বকবক’ উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২০ সালে ইরাকে ইরানের কুদস বাহিনীর কমান্ডার কাসিম সোলেইমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সেসময়কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-সহ মার্কিন কর্মকর্তারা তেহরানের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন।

ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের মুখপাত্র অ্যান্টনি গুগলিয়েলমি বলেছেন, তাদের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাগুলোও ‘প্রতিনিয়ত নতুন সম্ভাব্য হুমকির তথ্য পাচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুসারে সংস্থানগুলোও সেভাবে সামঞ্জস্য করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button