Top Newsরাজনীতি

‘ইউনূসের সংস্কার’ নিয়ে ধোঁয়াশায় ফখরুল, ভোট নিয়ে আলোচনা দাবি

মোহনা অনলাইন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হতাশ হয়েছেন  অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশে ভাষণে। জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ না দেখে হতাশ হয়েছেন তিনি।

সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ভাষণে যেসব সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো স্বল্প সময়ে করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সংলাপের দাবি জানিয়েছেন।

ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীন-গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা চলছে। ১৫ বছর ধরে চলা রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল শেষ হয়েছে। ছাত্র-জনতা সর্বস্তরের মানুষের সফল অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের পতন ও শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া এটা বড় বিজয়।’
 
দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দেশে বন্যা হচ্ছে, এটা হতেই পারে। তবে যেভাবে বন্যার পানি এসেছে, এটা ক্রিমিনাল অফেন্স। ভারত তাদের বাঁধ ছেড়ে দিয়েছে কোনো ঘোষণা না দিয়ে। ভাটির দেশ হিসেবে আমাদের সতর্ক করার দরকার ছিল, সেটা তারা করেনি“।

 

জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস তার সরকারের যে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, সে বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘‘এখনও আমি ধোঁয়াশায়, যে অবস্থাটা সেটা আমার পরিষ্কার হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম যে, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়, তিনি একটা রোডম্যাপ দেবেন… সেই রোডম্যাপ আমরা কিন্তু ‘ট্রানজিশন টু ডেমোক্রেসি’, এটা আমরা কিন্তু উনার বক্তব্যের মধ্যে পাইনি।

“ রিফর্মসের কথা বলেছেন, সেই রিফর্মগুলো কোন কোন বিষয়… সেটারও কিছু কিছু তিনি আভাস দিয়েছেন… আমি জানি, সেগুলো এই অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব না।”

“আমি আশা করব, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সেই প্রক্রিয়াটির দিকে যাবেন খুব দ্রুত যাবে এবং তিনি রাজনৈতিকগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন।”

নির্বাচন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “উনি সঠিক বলেছেন। অবশ্যই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হবে। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তো রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান ও পরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে এসে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিলেন ফখরুল। দুই দিন পর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ থেকেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করা হয়।

গত ১২ অগাস্ট প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক করে এসে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, “একটা নির্দিষ্ট সময় লাগবে নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে। আমরা তাদেরকে সেই সময়টি আমরা অবশ্যই দিয়েছি।”

তবে ১৫ অগাস্ট থেকে বিএনপি নেতার বক্তব্য কিছুটা পাল্টে যেতে থাকে। সেদিন নয়া পল্টনে বিএনপির এক সমাবেশে তিনি বলেন, তারা সরকারকে ততক্ষণ সমর্থন দেবেন, যতক্ষণ তারা ‘গণতন্ত্রের পক্ষে’ থাকবে, গণতান্ত্রিকভাবে তারা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ সরকারের কাছে দেশের মানুষের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা। প্রধান উপদেষ্টা গতকাল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। বলেছেন নির্বাচন কবে হবে, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত- এ কথা জানিয়ে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তে যাওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্রুত আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button