Top Newsআন্তর্জাতিকজাতীয়

জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং ভারতের অবস্থান

মোহনা অনলাইন

জুলাই গণঅভ্যুত্থান। বিশ্বকে অবাক করেছে ! কোন প্রকার সশস্ত্র সংগ্রাম বা সামরিক অভ্যুত্থান নয়। সাধারণ ছাত্রজনতার সর্বাত্মক আন্দোলনে দীর্ঘ সময়ের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে ! বিশ্ববাসীর কাছে এক নতুন দৃষ্টান্ত।

তবে অনেকের বদ্ধমূল ধারণা, এই পরিবর্তনের নেপথ্য নায়ক ভিন দেশী কোন শক্তি।বিশেষ করে নিকট প্রতিবেশী ভারত মনে করে, বাইরের মদত ছাড়া বাংলাদেশে এতবড় ঘটনা সম্ভব নয়। এব্যাপারে ভারতের সন্দেহের আঙ্গুল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। তাই আকারে ইঙ্গিতে তারা এ-কথা বলার চেষ্টা করে।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারত সফরকালে, ভারতীয় সাংবাদিকদের প্রায় সকলেই এ নিয়ে প্রশ্নকরে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাংলাদেশের ক্ষমতার পরিবর্তন। বা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তাদের কোন ভুমিকা ছিল না। উপস্থিত ভারতীয় সকল সাংবাদিকদের এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এই ধারণা অযৌক্তিক।

এদিকে ভারতের আরেক মিত্র রাশিয়া-ও অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশের এই পরিবর্তনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে। রাশিয়া জানায়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসেই তারা এই বিষয়টি’র ব্যাপারে সতর্ক করে ছিল।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাঁদের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর মস্কো থেকে এব্যাপারে এক বিবৃতি প্রকাশ করে। ঐ বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আরেক আরব বসন্তের মতো পরিস্থিতি ঘটাতে পারে।

তবে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকা সম্পর্কে এতোটাই নিশ্চিত ছিল যে, রাশিয়ার আগাম সতর্কতা আমলে নেয়নি। সে সময়কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘রাশিয়া কী বলেছে, এটা আমাদের ইস্যু না। এ বিষয়ে ওদেরকেই জিজ্ঞেস করেন। অনেকে অনেক ধরনের কথা বলবে। কিন্তু আমরা এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাশিয়া ভারতকেও সতর্ক করেছিল। ভারত-ও শেখ হাসিনার সরকারের মতোই বিষয়টি তেমন একটা আমলে নেয় নি।

এদিকে কয়েকদিন আগে বেইজিং এ বিষয়ে মুখ খুলেছে। বেইজিং জানায় তারা টের পেয়েছিল, বছর খানিক ধরে সরকার পরিবর্তনে ভেতরে ভেতরে কাজ চলছিল।

রাশিয়া এবং দুই পরাশক্তি বিষয়টি জানতো অথচ আঞ্চলিক শক্তি ভারত জানতো না ! হাসিনা সরকার ক্ষমতার নেশায় মদমত্ত ছিল। কিন্তু ভারত-ও কি তাই ছিল ? চীনের সাথে ভারতের তেমন সখ্যতা নাই। কিন্তু রাশিয়া তো ১৯৪৭-এর ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। রাশিয়া ভারতকে সতর্ক করা সত্ত্বেও বিষয়টি আমলে নেয় নি ! আসলেই কি এটা সত্য মেনে নিতে হবে ?
বিষয়ি যদি আমরা এভাবে ভাবার চেষ্টা করি, ভারত কি শুধু মাত্র রাশিয়ার মিত্র। আমেরিকার-ও তো ঘনিষ্ঠ সহযোগী !

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button