Top Newsআন্তর্জাতিক

জেলেনস্কি ‘স্বৈরাচার’ : ট্রাম্প

শাহিন রাজা: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প,জেলেনস্কিকে “স্বৈরাচার” বলে আক্রমণ করেছেন। জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে মস্কো পরিচালিত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প একটি বিভ্রান্তির মধ্যে আছেন।

জেলেনস্কির বক্তব্য শুনে ট্রাম্প ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এর প্রতিক্রিয়ায় গত পরশু (১৮ ফেব্রুয়ারি) ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত এক সভায় ট্রাম্প, জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক হিসেবে অভিযোগ করেন। ঐ সভায় ট্রাম্প আরও বলেন, “নির্বাচনের সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও নির্বাচন দিচ্ছে না জেলেনস্কি। তাঁর ভুলের কারণে দেশটি ভেঙে পড়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে জেলেনস্কির তলানীতে ঠেকেছে।” তারপর-ও সে যুদ্ধ রাখতে চায় বলে ট্রাম্প অভিযোগ এনেছেন। ট্রাম্প বলেন, “জেলেনস্কি মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ভালোই খেলেছেন।”

ট্রাম্পের এই বক্তব্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের মাঝে ট্রাম্পের প্রতি সমালোনার সৃষ্টি হয়েছে । তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জার্মান চ্যান্সেলর বলেছেন,”প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি’র গণতান্ত্রিক বৈধতা অস্বীকার করা হবে বড় ধরনের ভুল। শুধু ভুলই নয়, এটা আগামীতে বিপদজনক হয়ে দেখা দিতে পারে।”

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর পরই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার স্টারমার ইউক্রেনের প্রসিডেন্টকে ফোন করেন। ফোন করে বলেন, “জেলেনস্কির প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেন, “স্যার স্টারমার ইউক্রেনের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা হিসেবে রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেছেন। মুখপাত্র আরও বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে যুক্তরাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।”

সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনও ট্রাম্পের “স্বৈরশাসক” শব্দটি ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক-ও স্বৈরশাসক মন্তব্যকে, অযৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে বলেন, আপনি যদি কেবল একটি টুইট করার পরিবর্তে বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাহলেই দেখতে পাবেন, ইউরোপে কোন দেশের নাগরিক একনায়কতন্ত্রের পরিস্থিতিতে বাস করছে? উত্তর হবে রাশিয়ার এবং বেলারুশের জনগণ।

ইউক্রেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আর্সেনি ইয়াতসেনিয়ুক বিবিসিকে বলেন ট্রাম্পের মন্তব্যে রাশিয়া ইতিমধ্যেই উৎফুল্ল। ভলোদিমির জেলেনস্কি একজন সম্পূর্ণ বৈধ রাষ্ট্রপতি। ইউক্রেনে সামরিক আইনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না।

গত মঙ্গলবার ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের মন্তব্যের মাধ্যমে এই বাকযুদ্ধ শুরু হয়। সেই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প, যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেন। ট্রাম্প ইউরোপকেও লক্ষ্য করে বলেন য ইউক্রেনের যুদ্ধ আমাদের চেয়ে ইউরোপের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ থেকে আমরা অনেক দুরে বাস করছি। মধ্যবর্তী অঞ্চলে বিশাল এবং একটা সুন্দর সমুদ্র রয়েছে। যা আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপ এই অঞ্চলে শান্তি আনতে ব্যর্থ হয়েছে?”

লেখক: শাহীন রাজা, হেড অব এডিটোরিয়াল, মোহনা টেলিভিশন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button