Top Newsসংবাদ সারাদেশ

অপপ্রচারে অন্ধকার আলো

মোহনা অনলাইন

অপপ্রচার এবং প্রপাগাণ্ডা পৃথিবীর সম্প্রীতি ভেঙ্গে দিচ্ছে। ভেঙে পড়ছে বিশ্বাস আর সম্পর্ক। সন্দেহ এবং অবিশ্বাসের দোলাচলে পৃথিবীর মানুষ ! এ কারণেই জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, মুসলিম-বিরোধী প্রচার,প্রোপাগান্ডা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, জাতিসংঘ মহাসচিব আতঙ্কিত !

তাই তিনি বিভিন্ন দেশের সরকারকে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিকে ঘৃণামূলক বক্তব্য রোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত শনিবার ( ১৫ মার্চ) আন্তর্জাতিক “ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধ দিবস” উপলক্ষে গুতেরেস এই মন্তব্য করেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব উল্লেখ করেন, গাজায় ইসরায়েলের ১৭ মাসব্যাপী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে একদল সামাজিক মাধ্যমে আরব এবং ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। একইভাবে ইহুদিদের বিরুদ্ধেও আরেক দল একই কাজ করছে। তবে আমরা লক্ষ্য করছি, ইসলাম বিরোধী গোঁড়ামি উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিগত অবমূল্যায়ন এবং বৈষম্যমূলক নীতি যা মানবাধিকার ও মর্যাদা লঙ্ঘন করে। ব্যক্তি এবং উপাসনালয়ের বিরুদ্ধে-ও সরাসরি সহিংসতা পর্যন্ত উৎসাহিত করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব একটি ভিডিও পোস্টে বলেছেন, এই অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে অসহিষ্ণুতা, চরমপন্থী মতাদর্শ প্রকাশ পায়। এটি ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আক্রমণের অংশ। যা পৃথিবীকে অভিশপ্তের দিকে নিয়ে যাবে। তিনি বিভিন্ন দেশের সরকারকে, সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা’র আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব যা বলেছেন,তা বিশ্বে এক নতুন সঙ্কট হয়ে দেখা দিয়েছে। শুধু মাত্র দেশ বা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। ব্যক্তি, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল এবং সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চলছে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার। একারণে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তি। এক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আরেক জনগোষ্ঠী। এবং এক সম্প্রদায়ের প্রতি ভিন্ন সম্প্রদায় বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। রাজনৈতিক দলগুলো-ও নীতি, নৈতিকতা ভুলে একে অপরের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে। অবশ্যই তা সামাজিক মাধ্যম গুলোর মধ্য ছড়ানো হচ্ছে। সমাজে সবধরনের সম্প্রীতি ভেঙে, ভেঙে পড়ছে ! এখন বিশ্বাসের জায়গায় অবিশ্বাস আর সন্দেহ!

দেশ, জাতি, জাতিগোষ্ঠী এবং বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি ধরে রাখতে হবে। এই ধরে রাখার জন্য সামাজিক মাধ্যমগুলোকে প্রধান ভূমিকা নিতে হবে। কেননা এই সামাজিক মাধ্যমেই অপপ্রচার বা প্রপাগাণ্ডা চালানো হচ্ছে। কন্টেন্ট বা পোস্টগুলো প্রচারের আগে খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়। এই খেয়াল রাখতে গিয়ে মানুষের অধিকার যেন ক্ষুন্ন না হয়। তবে একথাও মাথায় রাখতে হবে, অধিকার মানে এই নয় আরেকজনের অধিকার ক্ষুন্ন করার অধিকার। বা সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে আরেকজনের সামাজি মর্যাদা বিনষ্ট করা। কিংবা অপপ্রচারের মাধ্যমে মানুষের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া।

সামাজিক মাধ্যম হতে হবে মানবিক। মানব কল্যাণ এবং মঙ্গলে ব্যবহার হবে এই সকল সামাজিক মাধ্যম। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের কারণে অনেক দুর্যোগ কবলিত এলাকায় মানবিক সাহায্য দ্রুত পৌঁছে গেছে। জাতিগত দ্বন্দ্ব এবং যুদ্ধ বন্ধে সামাজিক মাধ্যমে শান্তির পক্ষে পৃথিবীর মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাই আমাদের অপপ্রচার নয় সামাজিক মাধ্যম হবে কল্যাণের দূত ।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button