সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে আগুনের সর্বশেষ আপডেট

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি একটি কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ আগুনে দগ্ধ এবং আহত শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কদমরসুল এলাকায় বিএম ডিপো নামের এক কন্টেইনার টার্মিনালে  আগুন লাগে ৷  পরে রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে৷

 

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সবগুলো ইউনিট চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়৷

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান রোববার সকালে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমকে জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও বারবার বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। ডিপোতে রাসায়নিক থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে।

 

রাসায়নিকের কারণে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে৷

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, রোববার বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত মোট ৪১ জনের মরদেহ মার্গে এসেছে৷ তাদের মধ্যে ৬ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের উপ-সহকারী পরিচালক শাহজাহান সিকদার৷

 

আহত ও দগ্ধদের মধ্যে অন্তত ১১ জন পুলিশও রয়েছেন৷ তাদের মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে৷

 

মেডিকেলের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন বেরসকারি হাসপাতালেও রোগীদের নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াস রাতেই আহতদের সেবায় নগরীর চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

 

সকালে ডিপোতে এসে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো আশরাফ উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা এবং প্রাথমিকভাবে আহতদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। সব বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি করা হবে।

 

সেনাবাহিনীর ১ ইঞ্জিনিয়ার কোরের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিরা সুলতানা বলেন, “সমুদ্রে যাতে রাসায়নিক না যায়, সেটা প্রটেক্ট করাই এখন আমাদের মূল কাজ। সে লক্ষে কাজ চলছে। কিন্তু কয়টা কন্টেইনারে রাসায়নিক ছিল তা এখনো জানা যায়নি।”

 

ঘটনাস্থলে বিএম ডিপোর জেনারেল ম্যানেজার (সেলস ও মার্কেটিং) নাজমুল আক্তার  সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্তের পর বোঝা যাবে, কেন আগুন লাগলো। স্যাবোটাজও হতে পারে। কী হয়েছে কেবল তদন্ত বলতে পারবে।”

 

তার সঙ্গে থাকা ডিপোর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল আলম খান স্বপন বলেন, “হাজার কোটি টাকার পণ্য আছে এই ডিপোতে। শত শত কন্টেইনার পুড়েছে। রাতে সব রকমের কর্মীরা কাজ করছিল। দেশের জন্য বিরাট ক্ষতি। কারণ, এখানে বেশিরভাগ রপ্তানি পণ্য।”

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button