২২-২৮ মে, ২০২৩ পর্যন্ত ভূমি সেবা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, ঢাকা নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এই সেবা সপ্তাহে সকল ভূমি অফিসে ভূমি সেবা ও তথ্য বুথ স্থাপন করা হয়েছে। মহানগরের বিভিন্ন স্থানে, উপজেলাসমূহে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী, সেবা প্রার্থীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণদের নিয়ে আলোচনা সভা, সেমিনার, র্যালি ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট ভূমি সেবা প্রদানে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন উদ্যোগসমূহ, ই-নামজারির আবেদন প্রক্রিয়া, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের জন্য রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা হবে।
সোমবার (২২ মে) বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকার সভাকক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলার প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এই তথ্য জানান।
ভূমি সেবা সপ্তাহ,২০২৩ উপলক্ষ্যে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। তার আগে এদিন ভূমি সেবা সপ্তাহ,২০২৩ উদ্বোধন করেন ঢাকার জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের সুখী, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হয়রানিমুক্ত স্মার্ট ভূমি সেবা প্রদান করার প্রত্যয় হবে ভূমি সেবা সপ্তাহ ২০২৩ উদযাপনের মূল লক্ষ্য। ভূমি সেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত সকল কর্মসূচি সর্বসাধারণের মাঝে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জ্ঞাপন করছি। সকলের সহযোগিতায় ভূমি সেবা সপ্তাহ, ২০২৩ সফল হোক এই প্রত্যাশা রাখছি।
তিনি আরো বলেন,সুখী, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে জাতির পিতা সর্ব প্রথম ভূমি সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আধুনিক ভূমি ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ২৮ টি মৌলিক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি, ২০০১ গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি ভূমি সংক্রান্ত আইন কানুনের যুগোপযোগিকরণের মাধ্যমে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার প্লাটফর্ম গড়ে তোলেন। ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থপনার সুফল হিসাবে ‘ই-নামজারি, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ, অনলাইন সায়রাত মহাল, জলমহাল, ব্যবস্থপনা, ই-পৰ্চা, ই-নকশা গ্রহণসহ নানাবিধ ভূমি সেবা ঘরে বসে গ্রহণ করা যায়। তাছাড়া ডাকসেবার মাধ্যমেও ভূমি সেবা দেয়া হয়।
ডিজিটাল ভূমি সেবা প্রদানে ঢাকা জেলার রাজস্ব প্রশাসন অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। বর্তমানে ঢাকা জেলার সকল ভূমি অফিসে ৯ দিনে নামজারি নিষ্পত্তি করা হয়, শতভাগ অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ করা হয় এবং অনলাইনে ডি,সি,আর প্রদান করা হয়। ঢাকার সকল ভূমি অফিস ক্যাশলেস ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, হয়রানিমুক্ত ভূমিসেবা গ্রহণে অনলাইনে শুনানি গ্রহণসহ অফিসের বাহিরে গণশুনানি করে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, লিজ নবায়নের আধুনিকায়ণে ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যকর বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঢাকা জেলার প্রশাসন সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ যাবত ৫৫.৫৩ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে এবং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়াও যাছাই-বাছাইকরণের মাধ্যমে ঢাকা জেলার অসহায়, দরিদ্র, গৃহহীন, দুস্থদের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ আশ্রায়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পূনর্বাসনসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে স্মার্ট জাতি গঠনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। সেই লক্ষ্যেই ডিজিটাল সংযোগের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় স্মার্ট ভূমি সেবা প্রদানে বদ্ধ পরিকর। স্মার্ট ভূমি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় কতিপয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যেমন-স্মার্ট নামজারী, স্মার্ট ভূমি উন্নয়ন কর, রেজিস্টেশনমিউটেশনের আত্মসংযোগ, স্মার্ট ভূমি রেকর্ড, স্মার্ট ভূমি পিডিয়া, স্মার্ট ভূমি নকশাসহ অসংখ্য উদ্যোগ।
ঢাকার জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমাদের সবারই ভূমির সাথে কোন না কোন সম্পৃক্ততা রয়েছে। কারণ সবচেয়ে বেশি কাজ ভূমি সম্পর্কিত। আর এই বিষয়টি মাথায় নিয়ে যতগুলো সেবা দিয়ে থাকি সবগুলো অনলাইনে দিচ্ছি অর্থাৎ যাবতীয় সেবা অনলাইনে দেয়া হচ্ছে। ১৫/২০ বছর আগে ভূমি কেন্দ্রিক যে ভোগান্তিগুলো ছিল, এখন অনেক কমে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে আরও কমে আসবে। আরেকটা বিষয় দেখেন, এখনকার সময়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নামজারির কাজ, সেটাও ১৪ দিনে করার নির্দেশনা দিচ্ছি। আর ঢাকায় ৯ দিনে এই কাজ করা হচ্ছে। আর এটাকে আরও কার্যকর ভাবে করার জন্য ২২ -২৮ মে পর্যন্ত ভূমি সপ্তাহ পালিত হবে।
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন,অনিয়ম হলে আমি কাউকে চিনবো না। সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।