আজ উদ্বোধন করা হচ্ছে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আগামীকাল রবিবার (০২ সেপ্টেম্বর) থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা থেকে ফার্মগেট অংশ। আধুনিক নির্মাণ আর দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনা বদলে দিয়েছে নগরের মানচিত্র। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। প্রায় ২০ কিলোমিটার এই পথের শেষ প্রান্ত চিটাগং রোড পর্যন্ত ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রকল্পের শুরু ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি। কিন্তু জমি না পাওয়া, নকশায় জটিলতা, অর্থায়নের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় কাজ শুরু করা যায়নি। অবশেষে ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ চীনের দুই ব্যাংক থেকে ঋণ পায় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। অবশেষে প্রকল্প হাতে নেওয়ার ৯ বছর পর ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হয়। রাজধানীর দুই প্রান্তকে উড়াল মহাসড়কের মাধ্যমে যুক্ত করতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
পিপিপির আওতায় এই প্রকল্প মোট তিনটি ধাপে কাজ হচ্ছে। প্রথম ধাপ বিমানবন্দর থেকে বনানী ৭.৪৫ কিলোমিটার। দ্বিতীয় ধাপ বনানী থেকে মগবাজার ৫.৮৫ কিলোমিটার। তৃতীয় ধাপ মগবাজার লেভেল ক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী ৬.৪৩ কিলোমিটার। তবে প্রথম দফায় চালু হচ্ছে তেজগাঁও পর্যন্ত অর্থাৎ প্রথম ধাপ আর দ্বিতীয় ধাপের কিছু অংশ।
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘নতুন করে এই প্রকল্পের জন্য আলাদা করে আমরা শুধু জমি অধিগ্রহণই করিনি, সমন্বয় করতে হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বিশেষ করে রেলওয়ে, সিলিভ এভিয়েশন, উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জমি রয়েছে। তাদের সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজগুলো করতে হচ্ছে। এই সমন্বয় করেই নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ করা যাবে বলে আশা করছি।’
শুরুর যাত্রার এই পথে ১১ কিলোমিটারে ১৫টি র্যাম্প থাকলেও চালু হচ্ছে ১৩টি র্যাম্প দিয়ে। ছয়টি টোল প্লাজা। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। রেললাইনের সমান্তরাল এই পথ হচ্ছে চার লেনের। নির্মাণশৈলী, বিশেষ করে র্যাম্পগুলো সড়কে মেলাতেও মুনশিয়ানা দেখিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পকে সহযোগিতা করতে থোক বরাদ্দের বাইরেও ‘সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রজেক্ট’ নামে আলাদা একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ করা ছিল মূল কাজ। প্রকল্পের প্রায় পুরো পথ তৈরি হয়েছে বিদ্যমান রেলপথের ওপর দিয়ে। তবুও ভূমি অধিগ্রহণ, ইউটিলিটি অপসারণ-প্রতিস্থাপন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ, পরিবেশগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা কার্যক্রম এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ভবন ও অন্যান্য সুবিধাদি দিতে সাপোর্ট প্রকল্পে সরকারের খরচ হচ্ছে চার হাজার ৯১৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।