আন্তর্জাতিকজাতীয়

আজ ঢাকায় আসছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মোহনা সংবাদ

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের জন্য আজ বৃহস্পতিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকায় আসছেন। তিনি সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। আগামীকাল শুক্রবার (০৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা ছেড়ে দিল্লি যাওয়ার আগে লাভরভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় বাংলাদেশকে সমর্থন জানিয়েছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। তবে স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছরে মস্কোর কোনো প্রতিনিধি ঢাকা সফর করেননি। নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন পশ্চিমাদের নানা তোড়জোড়, এমন সময় মার্কিনবিরোধী অবস্থান নেয়া রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ঢাকা সফরে আসছেন।

পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের বৈশ্বিক এলিট মঞ্চে বাংলাদেশকে জায়গা করে দেয়া মহাস্থাপনার নাম ধীরে ধীরে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। নানা চ্যালেঞ্জ আর সংকট পেরিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুরের নির্মাণযজ্ঞে কারিগরি ও আর্থিক দুই ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের সহযোগী মুক্তিযুদ্ধকালের পরম বন্ধু রাশিয়া।

ঢাকা ও মস্কোর কূটনৈতিক সূত্রগুলো গতকাল বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমকে বলেছে, বাংলাদেশে রাশিয়ার প্রথম কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সামগ্রিকভাবে দুই পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক সহযোগিতা আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।

সের্গেই লাভরভের সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গত মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অনেক দিনের সম্পর্ক। সম্প্রতি বিশ্বে যেসব জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেন সংকটের পর থেকে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা রাশিয়াকে একটা অনুরোধ করতে পারি, দ্রুত যেন একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করা যায়।’

পররাষ্ট্রসচিব জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সক্রিয় সমর্থন, খাদ্য, সার ও জ্বালানির মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সের্গেই লাভরভ ঢাকা সফরের সময় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তিগত সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। দুই পক্ষের আলোচনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি এবং এর প্রভাব ও রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহব্যবস্থায় সংকট এবং জ্বালানি, খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এই পরিপ্রক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি আলোচিত হতে পারে।

কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর পশ্চিমা চাপে কোণঠাসা রাশিয়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়টি জোর দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকভাবে পরীক্ষিত বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশকে স্বাভাবিকভাবেই পাশে চাইবে তারা।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button