রাজশাহী

নওগাঁর আত্রাইয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে ঘরে ফেরেন আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কয়রা আশ্রয়ন প্রকল্পের স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে ঘরে ফেরেন। আশ্রয়ন পাড়ার প্রবেশ মুখে খালের উপর ব্রীজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে ঘরে ফিরতে হয় তাদের।

এতে শিশু, বৃদ্ধসহ চলাচলকারীদের পা পিছলে কখনো বাঁশের চাটাইয়ের ফাঁকের মধ্যে পা-আটকে যাচ্ছে আবার কখনো খালের মধ্যে পরে যাচ্ছেন। ফলে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মনিয়ারী উইনিয়নের কয়রাগ্রামে খালের পার্শ্বে গৃহহীনদের জন্য মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ঘর নির্মান করা হয়েছে। আশ্রয়নে ১৬টি গৃহহীন পরিবারের জন্য ১৬টি ঘর নির্মান করে দেয়া হয়েছে।

এছাড়া আগে থেকেই আরো চারটি পরিবার ঘর নির্মান করে বসবাস করে আসছেন সেখানে। গত বছরে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহ হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু চলাচলের পাকা রাস্তার বিপরীতে খালের পশ্চিম পাশে ঘরগুলো নির্মান করা হলেও ঘরে ফিরতে খালের উপর ব্রীজ নির্মান করা হয়নি। ফলে আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রবেশ মূখেই বাঁশের সাঁকো নির্মান করে ওই সাঁকোর উপর দিয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। এতে শিশু ও বৃদ্ধসহ বাসিন্দারা পরেছেন চরম বিপাকে। আবার ভ্যান চালকরা প্রতিদিন ঘর থেকে ভ্যান বের করতে এবং ঘরে ফিরতেও সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। একটু বৃষ্টি হলেই হেঁটে চলাচল কিংবা ভ্যানের চাঁকার সাথে লেগে থাকা কাঁদায় সাঁকোটি কাঁদাময় হয়ে পিচ্ছিল হয়ে পরে। ফলে সাঁকো পাড়ি দিতে শিশু, বৃদ্ধরা পা পিছলে কখনো বাঁশের চাটাইয়ের ফাঁকের মধ্যে পা-আটকে যাচ্ছে আবার কখনো খালের মধ্যে পরে যাচ্ছেন। আবার অনেক সময় ভ্যানগাড়ী ও সাঁকো থেকে পিছলে খালের মধ্যে পরে যাচ্ছে।

আশ্রয়নের বাসিন্দা মকবুল হোসেন (৬৫), সুইট আলী শেখ (৩৫) ও জলি বিবি (২৮)সহ বাসিন্দারা জানালেন বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচলে দূর্ভোগের কথা। তারা বলেন, ঘর নির্মানের সময় খালের উপর মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করে ইট, বালু, সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করে ঘর নির্মান করে দিয়েছে। ঘর নির্মানের পর খালে অবাধ পানি চলাচলের জন্য সেই মাটির রাস্তা ভেঙ্গে দিয়ে উন্মুক্ত করা হয়েছে। ফলে আশ্রয়নে প্রবেশ করতে খালের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করতে হচ্ছে। বাসিন্দারা বলছেন, সাগর নামে এক ভ্যানচালকের ভ্যানগাড়ী সাঁকো থেকে পিছলে খালের মধ্যে পড়ে যায়।

এছাড়া শিশু-বৃদ্ধরাও পা পিছলে কখনো সাঁকোর চাটাইয়ের ফাঁকে পা আটকে যায় আবার কখনো খালের মধ্যে পড়ে যায়। তারা আরও জানান, শুরু থেকেই শুনে এসেছি খালের উপর ব্রীজ নির্মান হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্রীজ নির্মান হয়নি। তারা বলেন, চলাচলে এবং মালামাল পরিবহনে আমরা চরম বেকায়দায় রয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে জায়গা দিয়েছেন, মাথা গোঁজার জন্য ঘর নির্মান করে দিয়েছেন, এখন এখানে একটা ব্রীজ নির্মান করে দিলেই আমরা দূর্ভোগ থেকে মুক্তি পাই। তাই দূর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত ব্রীজ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, আমার জানামতে আশ্রয়নে ব্রীজ নির্মানের জন্য ওইরকম কোন আলাদা প্রজেক্ট নেয়া হয় নাই। তবে এই উপজেলায় অনেকগুলো বীজ্র নির্মানের প্রজেক্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেগুলো অনুমোদন হলে সেখান থেকে একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়ে আশ্রয়নের বাসিন্দাদের পারা-পারে ব্রীজ নির্মান করে দেয়া হবে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button