নওগাঁর মান্দা-মহাদেবপুরে অত্রাই নদীর বেরিবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুই উপজেলার বেরিবাঁধে ঐ সব এলাকার কয়েকশ’ একর জমির ফসল, কলাবাগান, মন্দির পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেঁসে গেছে কয়েকটি পুকুরের লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ।
গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) উপজেলার সদর ইউনিয়নের রঞ্জনীতলা প্রহ্বল্লাদের বাড়ির কাছে এই ভাঙ্গন দেখা দেয়। দ্রুত এটি ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ১৫ থেকে ২০ ফুট বাঁধ ভেঙ্গে যায় এছাড়া মান্দা উপজেলার চার স্থানে ভেঙ্গে যায় বেড়ীবাঁধ । এই ভাঙ্গনের ফলে নদীর মেইন বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এই সব ভাঙ্গা স্থান দ্রুত মেরামত করা না হলে মেইন বাঁধও ভেঙ্গে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা কমপ্লেক্সের পিছনে পশ্চিম দিকে রেইনট্রি তলা থেকে দোহালী পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ আত্রাই নদীর পূর্বপাড়ের এই বেরিবাঁধ স্থানে স্থানে ভেঙ্গে যানচলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছিল। উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব আধা ভাঙ্গা স্থান দিয়ে পানি চোঁয়াতে থাকে। এরই জের ধরে আজ বাঁধটি ভেঙ্গে যায়।
এলাকার ইটভাটা মালিক হুমায়ুন কবির জানান, বাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানি দ্রুত এলাকায় ঢুকলে তার তিনটি পুকুর উপচে যায়। এতে তার চাষ করা লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেঁসে গেছে। এ ছাড়া বিশাল এলাকাজুড়ে কলার বাগান পানিতে ডুবে গেছে। সেখানকার মন্দিরের পুরোহিত সঞ্জিত কুমার জানান, বাঁধ ভাঙ্গা পানিতে মন্দির পুরো পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান জানান, মান্দা- মহাদেবপুর পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। তবে তারা শুধুমাত্র মেইন বাঁধের মেইনটেনেন্স করেন। বেরিবাঁধগুলো দেখার দায়িত্ব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানের। মহাদেবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুলতান হোসেন ও মান্দা উপজেলার প্রকল্প কর্মকতা রেজাউল করিম বাঁধ ভাঙ্গার কথা স্বীকার করে জানান, বাঁধটা এমনিতেই বড় আকারে ভেঙ্গেছে। কিন্তু এই মুহুর্তে তার কিছু করার নেই।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ হাসান তরফদার শাকিল জানান, বাঁধ ভাঙ্গার খবর পেয়ে সাথে সাথেই তিনি ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত এখানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গা স্থান মেরামতের ব্যবস্থা করবেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহাগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি দ্রুত এই ভাঙ্গা স্থান দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এনায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিঞা জানান, তার এলাকায় আত্রাই নদীর পূর্বপাড়ের কয়েক কিলোমিটার এলাকা মারাত্মক ঝুকির মধ্যে রয়েছে। গ্রাম পুলিশ ও মেম্বাররা সার্বক্ষণিক বাঁধ পাহাড়া দিচ্ছেন। ছোট খাট ভাঙ্গা স্থানে মাটি ফেলে মেরামত করছেন।