আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও কমেছে সয়াবিনের দাম। এতে সাবান, শ্যাম্পু, গ্লিসারিন, ভোজ্যতেল তৈরির মূল্য উপকরণটির মূল্য গত ১ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) তেলবীজটির দাম আরেক দফা হ্রাস পেয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদক যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক সয়াবিন মাড়াই হয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে তেলবীজটির সরবরাহ বৃদ্ধির জোরাল সম্ভাবনা জেগেছে। এ প্রেক্ষাপটে পণ্যটি দর হারিয়েছে।
গত সোমবার বাজার বন্ধ হওয়ার পর প্রকাশিত সাপ্তাহিক এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) অনুমান করছে; মোটের ওপর প্রায় তিন চতুর্থাংশ সয়াবিন মাড়াই করেছেন মার্কিন কৃষকরা। ফলে দেশটি থেকে বৈশ্বিক মার্কেটে রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়েছে। তাতে পণ্যটি চাপে পড়েছে।
এছাড়া বিশ্বের আরেক শীর্ষ রপ্তানিকারক ব্রাজিলে চলতি সপ্তাহে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এমনটি হলে দেশটিতে সয়াবিন রোপণ ত্বরান্বিত হবে। ফলে তেলবীজটির দাম নিম্নগামী হয়েছে।
আলোচ্য কার্যদিবসে সিবিওটিতে সবচেয়ে সক্রিয় সয়াবিনের চুক্তি মূল্য হ্রাস পেয়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। প্রতি বুশেলের দর স্থির হয়েছে। ১২ ডলার ৮৪ সেন্টে। কর্মদিবসের শুরুতে যা ছিল গত ১৬ অক্টোবরের পর সবচেয়ে কম।
ক্রেতাদের উদ্দেশে লেখা এক নোটে বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এগ্রিটেল জানিয়েছে, ব্রাজিলের মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ফলে সয়াবিনের রোপণ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে তেলবীজটির দাম কমেছে।
আর আগে গত ১১ অক্টোবর ২২ মাসের মধ্যে তেলবীজটির দাম সবচেয়ে কম ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ধারণার চেয়ে বেশি সয়াবিন উৎপন্ন হবে প্রত্যাশা করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে দরপতন ঘটেছে কৃষিজ পণ্যটির। বৈশ্বিক কৃষিপণ্য সরবরাহ ও চাহিদা পূর্বানুমানের (ডব্লিউএএসডিই) প্রতিবেদনে এসব কথা জানিয়েছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে রেকর্ড সয়াবিন উৎপাদন হবে উল্লেখ করে ইলিনয়ভিত্তিক কৃষি ঝুঁকি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্লেইটন পোপ কম্মোডিটিজের পরিচালক ক্লেইটন পোপ বলেন, ‘অসংখ্য লোক বলছেন, এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে রেকর্ড সয়াবিন উৎপাদন হবে। ইতোমধ্যে মার্কিন তেলবীজটির চাহিদায় পতন ঘটেছে। তাতে দামও নিম্নমুখী হয়েছে।’
এদিকে বিশ্বের শীর্ষ ভোক্তা চীনের ক্রেতাদের কাছে ১ লাখ ২১ হাজার টন সয়াবিন বিক্রি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। এ ছাড়া অন্যান্য গ্রাহকদের নিকট ২ লাখ ১৩ হাজার টন তেলবীজটি সরবরাহ করেছে তারা।