সারা দেশে এক কোটি পরিবারকে টিসিবির স্মার্ট কার্ড দেয়া হচ্ছে। এই স্মার্ট কার্ড এর মাধ্যমে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দেশের এক কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের কাছে তাদের পণ্য বিক্রি করবে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মালিবাগে পিডাব্লিউডি কলোনি অডিটোরিয়ামে কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, টিসিবির এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অসামঞ্জস্যতা দূর হবে।
আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সারাদেশে বিনামূল্যে এই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে উল্লেখ করে কার্ড পেতে কার্ডধারীদের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্মার্ট কার্ড বিতরণ আগামীকাল শুরু হলেও সারা দেশে এই কার্ড বিতরণের কাজ শেষ করতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। এ সময় যাঁরা স্মার্ট কার্ড পাবেন, তাঁরা স্মার্ট কার্ডে পণ্য নেবেন। যাঁদের কাছে পুরোনো কার্ড থাকবে, তাঁরা ওই কার্ডেই পণ্য নিতে পারবেন।
নভেম্বর মাসে পরিবার কার্ডধারী একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল অথবা কুঁড়ার (রাইস ব্র্যান) তেল, পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন। প্রতি লিটার সয়াবিন বা কুঁড়ার তেলের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। আর প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা ও প্রাপ্যতা সাপেক্ষে প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা দামে বিক্রি করবে টিসিবি।
বাজারে চিনির দাম নতুন করে বেড়েছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৮ থেকে ১৪০ টাকায়। যেহেতু টিসিবি প্রাপ্যতা সাপেক্ষে চিনি বিক্রি করবে, তাই অনেক ক্রেতা ভর্তুকি দামে চিনি না–ও পেতে পারেন। সরবরাহ–সংকটের কারণে এর আগেও টিসিবি তালিকায় থাকা পণ্য বিক্রি করতে পারেনি।
গত মাসে কেজিপ্রতি ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছিল টিসিবি। কিন্তু চলতি মাসের কার্যক্রমে টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি করবে না বলে জানিয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের দামও চড়া। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ১০০ থেকে ১১০ টাকা। নতুন পেঁয়াজ না ওঠা পর্যন্ত বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
অনুষ্ঠানে টিপু মুনশি বলেন, গরীব-দুখী, অসহায় মানুষ যারা দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন তাদের কথা বিবেচনা করে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড অর্থাৎ ৫ কোটি মানুষকে কম মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে তার চেয়েও বেশি মানুষকে সরকার ভর্তুকি মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, ডিএসসিসির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুন রশিদ শুভ্র। এতে সহযোগিতা করেন মেসার্স জে. কে. ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মনির হোসেন জমাদ্দার।