ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এক মাসের বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। মুহুর্মুহু হামলায় গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে গাজার বিভিন্ন স্থাপনা, হাসপাতাল এবং বাড়িঘর। স্বাধীনতাকামী যোদ্ধা হামাসকে নির্মূল করতেই এই অভিযান বলে দাবি করে আসছে নেতানিয়াহু সরকার।
এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার(১৪ নভেম্বর) নতুন করে হামাসের সদরদপ্তর হিসেবে পরিচালিত একটি বিশেষ টানেল ধ্বংসের দাবি করেছে ইসরায়েল। বলা হচ্ছে এই টানেল থেকেই গত ৭ অক্টোবরের নজিরবিহীন হামলা পরিচালনা করে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার রাজধানী গাজা সিটিতে অবস্থিত হামাসের একটি সামরিক কমান্ড সেন্টারের নিচে এই বিশেষ টানেলটি অবস্থিত। টানেলটি দখলে অংশ নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনীর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৪০১ ও গিভাতি ইউনিটের সেনারা। বলা হচ্ছে হামাসের এই বিশেষ টানেলটি ইসরায়েলের কিরিয়া সামরিক সদরদপ্তরের নিচে অবস্থিত আইডিএফের টানেলের মতোই বিস্তৃত ও সাজানো।
ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, বিশেষ এই টানেলটি মাটি থেকে প্রায় ৩০ মিটার নিচে অবস্থিত। ওপর থেকে নিচে নামতে ব্যবহার করা হয় সাতজনের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি লিফট। ধারণা করা হচ্ছে টানেলটিতে গাজার হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফ লুকিয়ে ছিলেন।
ইসরায়েলে সেনাবাহিনী মূলত তিনটি লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। যার প্রথমটি হামাস যোদ্ধাদের নিমূল দ্বিতীয়টি হামাসের টানেলগুলো ধ্বংস ও তৃতীয়টি গোষ্ঠীটির হাতে বন্দি সব ইসরায়েলির মুক্ত করা।
এবারের যুদ্ধে টানেল ধ্বংসে রোবটসহ বিভিন্ন প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব মাধ্যমে টানেল শনাক্তের পর দ্বিতীয় ধাপে একজন কর্নেল পদমর্যাদার একজন কমান্ডারের নির্দেশে টানেলে প্রবেশ করছে ইসরায়েলি সেনাসদস্যরা।
মঙ্গলবারের অভিযানে হামাসের সমস্ত দূরপাল্লার কর্নেট অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করছে ইসরায়েলি বাহিনী। যদিও হামাসের কাছে এখনও স্বল্পপাল্লার রকেট-চালিত-গ্রেনেড লঞ্চারগুলোর একটি বড় মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
প্রসঙ্গত, এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।