বিশ্বে প্রযুক্তির যুগ এগিয়ে যাচ্ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের আগে আমরা দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা মহামারী চলাকালীন এর সবই চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি, যেখানে বিশ্বের অনেক দেশ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। সরকার অতীতের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে এবং আশা করছে ভবিষ্যতে তা ছাড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিগত কয়েক অর্থবছরে আইটি সেবা রফতানি করে ৫০০-৬০০ মিলিয়িন ডলার আয় করেছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা রয়েছে বাংলাদেশের। দেশে আইটি ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের আশা করা হচ্ছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা নির্ধারণ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশে তৈরি ডিজিটাল ডিভাইসের রপ্তানি আয় বর্তমানের প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
একই সময়ে আইসিটি পণ্য ও আইটি-এনাবল সার্ভিসের অভ্যন্তরীণ বাজারও ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী চার বছরের মধ্যে দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য বাজার ধরতে ডিজিটাল ডিভাইস তথা মোবাইল ফোন, কমপিউটার ও ল্যাপটপের মতো আইটি পণ্য বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার। এরই প্রধান অংশ হবে সফটওয়্যার রপ্তানি।
এ রোডম্যাপের সঠিক বাস্তবায়ন হলে দেশে আইটি ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে। প্রায় ২০০ কোটি ডলারের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা হবে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন। আইসিটি বিভাগের আশা, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ আইসিটি এবং আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) পণ্য উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হবে। এটি সরকারের সবার জন্য ডিজিটাল অ্যাক্সেস এজেন্ডা বাস্তবায়নেরও সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাব অনুযায়ী, দেশের জিডিপির প্রায় দেড় শতাংশ আসে আইটি খাত থেকে। বর্তমানে দেশে প্রায় ৫ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে আইটি খাতের ওপর ভিত্তি করে।
যেখানে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলার। সেখানে হার্ডওয়্যার খাতের অবদান একেবারেই অপ্রতুল। হার্ডওয়্যার খাতে দেশ কেন পিছিয়ে আছে – এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগের প্রধান সেজুতি রহমান বলেন, যেসব দেশ হার্ডওয়্যারে ভালো করছে, তারা শুরু থেকেই ইলেকট্রনিক্স বা মেকানিক্যাল পণ্য নিয়ে কাজ করে আসছে। আমাদের আইটি খাত বলতে গেলে পুরোটাই সফটওয়্যারকেন্দ্রিক। তাই এখানে হার্ডওয়্যারের কাজের পরিবেশ এবং পরিস্থিতি গড়ে উঠেনি।’