স্বাস্থ্য

প্রতিদিন ঘি খাওয়ার উপকারিতা

মোহনা অনলাইন

বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে বেড়াতে গেলে, এখনো ঘি খাওয়ার প্রচলন চোখে পড়ে। দাদী-নানীরা সকালের গরম ভাতের সঙ্গে ঘি খেতে বলেন। তবে বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতন বাঙালিদের মধ্যে ঘি খাওয়ার প্রতি অনীহা দেখা যায়। সম্প্রতি বেশ কিছু সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ওই সমীক্ষাগুলোতে বলা হয়, ওজন বেড়ে যাবে এই ভয়ে অনেকে ঘি খান না। এই একই কারণে দুগ্ধজাত নানা খাবারও তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়।

তবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অন্য় কথা বলছে। চিকিৎসকদের মতে, ঘি খাওয়ার সঙ্গে শরীর খারাপ হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বরং মস্তিষ্ক থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরে একাধিক অঙ্গের সচলতা বৃদ্ধিতে ঘি’র কোনো বিকল্প হয় না। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত অল্প পরিমণে ঘি খেলে একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। তাহলে চলুন ঘি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়:

১. পুষ্টির ঘাটতি পূরণ:

প্রতিদিন ঘি খেলে শরীরের অভ্যন্তরে একদিকে যেমন ভিটামিন এ এবং ই-এর ঘাটতি পূরণ হয়, তেমনি অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্টের মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। এর ফলে পুষ্টির ঘাটতি দূর হওয়ার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

২. দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি: ঘি খাওয়ার ফলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। শীতকালে এর কার্যকারিতা অবর্ণনীয়। একারণে শীত থেকে বাঁচতে বেশি করে ঘি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

৩. এনার্জির ঘাটতি দূর করে: ঘিতে উপস্থিত উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড, বিশেষত লরিক অ্যাসিড একদিকে যেমন এনার্জির ঘাটতি দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করে, তেমনি শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি: নিউট্রিশনিস্টদের মতে, নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঘি’র কোনো বিকল্প হয় না। এতে উপস্থিত ওমাগা ৬ ও ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর ও মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি প্রকাশিত বেশ কিছু গবেষমায় দেখা গেছে, এই দুই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও কার্যকর।

৫. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: ঘি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। পাশাপাশি স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়াতে ঘি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এর ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বল হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। কারণ ঘি যে কোনো ধরনের রিচ খাবারকে দ্রুত হজম করাতে সক্ষম।

৬. ওজন হ্রাস পায়: যাদের ধারণা ছিল ঘি খেলে ওজন বাড়ে, তাদের বলছি ঘি খেলে ওজন বরং কমে। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ঘি’তে উপস্থিত এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বিদের ঝড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে।

৭. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখে: ঘি’র অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উপস্থিত ফ্রি রেডিকালদের ক্ষতি করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। ফলে কোষের বিন্যাসে পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। আমাদের দেশে অনেকেই রান্নায় ঘি ব্যবহার করেন। এটা কিন্তু খারাপ নয়।

৮. সৈন্দর্য বৃদ্ধি পায়: আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলছে, ঘি হল প্রকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। যা ত্বক এবং ঠোঁটের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু এটাই নয়, প্রতিদিন অল্প পরিমাণ ঘি’র সঙ্গে যদি সামান্য় জল মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বকের বয়স চোখে পরার মতো কমে যায়।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button