মুসলিম প্রধান দেশে এতদিন কোনও হিন্দু মহিলাকে নির্বাচনী ময়দানে লড়তে দেখা যায়নি। এবার সেই ইতিহাস বদলাতে চলেছে। দেশের আসন্ন জাতীয় সংসদের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এক হিন্দু মহিলা। ওই মহিলাকে নিয়ে পাকিস্তানে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। পাকিস্তানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি।
৩৫ বছর বয়সী সাভেরা প্রকাশ পেশায় একজন চিকিৎসক। সাভেরা তাঁর বাবা ওম প্রকাশের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে আশাবাদী। সাভেরার বাবা ওম প্রকাশও অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও পিপিপি এর সক্রিয় সদস্য। কওমি ওয়াতান পার্টির স্থানীয় একজন রাজনীতিবিদ সেলিম খান উল্লেখ করেছেন, সাভেরা প্রকাশ বুনে জেলার প্রথম নারী।
সাভেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বুনের জেলার পিকে-২৫ কেন্দ্র থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই সাভেরা বর্তমানে পাক-রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সাভেরা প্রার্থী হয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর দল, পাকিস্তান পিপলস পার্টির।
সাভেরা হঠাৎ করেই ঠিক করেন তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেবেন। রাজনীতির হাতেখড়ি কলেজে পড়ার সময় থেকে। ২০২২ সালে আবতাবাদ ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন। তারপর পিপিপি-র বুনের জেলার মহিলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। প্রথম থেকেই তিনি সোচ্চার হয়েছেন মহিলাদের উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও অধিকারের বিষয়ে।
সাভেরা জানিয়েছেন, নির্বাচনে জয়ী হলে মহিলাদের অধিকার রক্ষা ও সামগ্রিক উন্নয়নেরর উপরই বিশেষ জোর দেবেন। নিজে হিন্দু হলেও সাভেরার জনপ্রিয়তা রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যেও। নির্বাচনে জয় পাবেনই, বলছেন সাভেরা। ২৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন জমা দেন সাভেরা। বাবার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সাভেরা খাইবার পাখতুনখাওয়ারের বুনের জেলা থেকে পাকিস্তানে সাধারণ অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে মনোনয়ন পেশ করার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি তাঁর চিকিৎসা জীবনে সরকারি হাসপাতালের দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং অসহায়ত্বের অভিজ্ঞতা থেকে একজন নির্বাচিত বিধায়ক হওয়ার সিন্ধান্ত নেন। সাভেরার কথায়, ‘মানুষের সেবা করা আমার রক্তে রয়েছে। নিজে একজন চিকিৎসক। জয়ী হলে চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে চেষ্টা করব।বেহাল অবস্থায় থাকা হাসপাতালগুলির হাল ফেরানোর প্রতিশ্রুতিও দেন সাভেরা।