দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পণ্য সরবরাহের বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সচিবদের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় এই নির্দেশ দেন তিনি। নতুন সরকারের প্রথম এই সচিব সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় অর্থ ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন, কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ না করা, নতুন শিক্ষাক্রমে ভুল থাকলে সংশোধন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা, দুর্নীতি দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে নজরদারি করতে বলেছেন। নজরদারি করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্রের কথাও তিনি বলেছেন। অনেক সময় দ্রব্যমূল্যের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ আসে। নিউজ আসে। এক্ষেত্রে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে খুবই শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এটি যাতে কোথাও না হয়।
এছাড়া নতুন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক হতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, তার মূল লক্ষ্য হলো জনমানুষের অবস্থানের উন্নয়ন। কাজেই প্রকল্প থেকে জনমানুষের উন্নয়ন হয়েছে কি না, সেটা তিনি জানতে চাইবেন। কাজেই নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সেই বিষয়টি দেখতে বলেছেন।
তিনি বলেন, আজকের সভায় সব সচিব উপস্থিত ছিলেন। সচিব পদমর্যাদায় অন্য দপ্তরের যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারাও উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে সচিব সভা হয়, সেটা নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে হয় না। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা প্রত্যাশার কথা ও তার নির্দেশনা আমরা শুনতে চেয়েছি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্বাচনি ইশতেহার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রমজানের প্রস্তুতি, খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন ও সার ব্যবস্থাপনা, কর্মমুখী শিক্ষা, নতুন পাঠ্যক্রম ও কর্মমুখী শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
নতুন সরকারের প্রথম সচিব সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় নির্ধারিত কোনো আলোচ্য বিষয় থাকে না। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আজকের বৈঠকে ১৫-১৬ জন সচিব বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বিপিএএ, জননিরাপত্তা সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বিপিএএ, অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, শিক্ষা সচিব সোলেমান খান, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার প্রমুখ। সচিবদের বক্তব্যের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন, সার ব্যবস্থাপনা, কর্মমুখী শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, নতুন পাঠ্যক্রম, বিদ্যুৎ সরবরাহ, জ্বালানি নিরাপত্তা, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে এবং দুর্নীতি দমনে ব্যবস্থা নেওয়াসহ নানা নির্দেশনা দেন।