বিনোদন

হুমায়ুন ফরীদিকে হারানোর এক যুগ

মোহনা অনলাইন

ঋতুরাজ বসন্তের শুরুতে অসংখ্য ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। দেশের ছোট ও বড় পর্দার কিংবদন্তী অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে হারানোর এক যুগ পূর্ণ হলো মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় শক্তিমান এই অভিনেতার। 

অভিনয়ের প্রতি তীব্র টান থাকায় অল্প সময়েরে মধ্যেই নাট্য ব্যক্তিত্ব সেলিম আল দীনের সান্নিধ্য পান। এরপর নিজের অভিনয় প্রতিভা তুলে ধরেন। সুযোগ পান ঢাকা থিয়েটারে কাজ করার। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা শুরু।

মঞ্চ থেকে ‘নিখোঁজ সংবাদ’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে অভিষেক করেন হুমায়ুন ফরীদি। তবে ‘সংশপ্তক’ এর মাধ্যমে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। এতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘মহুয়ার মন’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘শীতের পাখি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মোহনা’, ‘শৃঙ্খল’ প্রভৃতি।

হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৯ মে, ঢাকার নারিন্দায়। তার অভিনয় জীবনের শুরু ছাত্রজীবনে মঞ্চ নাটকের মধ্য দিয়ে। হুমায়ূন ফরীদি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানিক ক্যামেস্ট্রির শিক্ষার্থী সেই সময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় দেশে। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দেশ স্বাধীনের পর ফের শিক্ষাজীবন শুরু করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়ালেখা করেন অভিনেতা।

চলচ্চিত্র তার প্রথম অভিনয় তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’য়। প্রথম বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘সন্ত্রাস’। এছাড়া উল্লেখযোগ্য কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো-‘ভণ্ড’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘মায়ের মর্যাদা’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’ ও ‘পালাবি কোথায়’। ‘সন্ত্রাস’ সিনেমার মাধ্যমে খলনায়ক চরিত্র শুরু হয় তার।

ব্যক্তিগত জীবনে প্রথমে বেলি ফুলের মালা দিয়ে ফরিদপুরের মেয়ে মিনুকে বিয়ে করেন হুমায়ুন ফরীদির । তখন এ বিয়ে সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এ ঘরে তাদের একটি কন্যাসন্তান। যার নাম দেবযানি। এরপর তিনি ঘর বাঁধেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে। তবে ২০০৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

‘মাতৃত্ব’ সিনেমার জন্য ২০০৪ সালে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান হুমায়ুন ফরীদি। এছাড়া ২০১৮ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক দেওয়া হয়। কিংবদন্তি এই অভিনেতা ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

 

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button