সরকারনির্ধারিত বর্ধিত বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন গাজীপুরের শ্রীপুরের এএ ইয়াং নামক কারখানার শ্রমিকরা। এসময় পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শনিবার (৯মার্চ) সকাল ৬ টা থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন চলে পৌনে আটটা পর্যন্ত।
কারখানা শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার বেতন বাড়ালেও কারখানা থেকে তারা আগের বেতন পাচ্ছেন। এতে তাদের ঘর ভাড়া, খাওয়া খরচ সহ জীবন নির্বাহ করতে সমস্যা হচ্ছে । বারবার জানালেও কোনো সমাধান দেয়নি কর্তৃপক্ষ। সমাধান না পেয়ে শনিবার ভোর ছয়টা থেকে ঢাকা – ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনাবাজার এলাকায় দুই পাশের লেন দখল করে অবস্থান নেন হাজারো শ্রমিক । এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে শ্রমিকদের কাজে ফেরানোর চেষ্টা করলে চড়াও হয় শ্রমিকরা। একপর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে শ্রমিকরা। তাদেরকে থামাতে পুলিশও সাউণ্ড গ্রেনেড ও ইটপাটকেল ছুঁড়তে দেখা যায়।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের ভাষ্য, ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধের দাবি আদায়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মধ্যে কামাল মিয়া বলেন, শ্রীপুরের প্রায় সব কারখানা সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করছে। এ কারখানাটি সেই নিয়ম মানছে না। অপর শ্রমিক মর্জিনা বলেন, তিন মাস ধরে বর্ধিত বেতনের শুধু আশ্বাস পেয়েছেন তারা। কিন্তু পূর্বের কাঠামো অনুযায়ী বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার উপপরিদর্শক এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। শ্রমিকরা রাস্তা ছেড়ে কারখানায় গেছেন। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক”।
উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ একই দাবীতে আন্দোলন করেছে জমজম স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শ্রমিকরা। গত বছরের শেষের দিকে শ্রমিকদের বিভিন্ন সময়ে দাবিদাওয়ার প্রেক্ষিতে সরকার পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে। মোট চারটি গ্রেডে এই বেতন পরিশোধে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নিম্নতম মজুরি বোর্ড (এম ডব্লিউ বি) শ্রমিকদের নতুন এই বেতন কাঠামো নিয়ে শিল্প মালিক ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে। তবে দেশের সুতা উৎপাদনকারী স্পিনিং কারখানাগুলো এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়ে কি না, তা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। মজুরি বৃদ্ধির পর থেকে এই সমন্বয়হীনতার কারণে দেশজুড়ে দফায় দফায় শ্রমিক বিক্ষোভ হতে দেখা গেছে।