বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ঘরের মাঠে নিজেকে টিকিয়ে রাখা কতখানি কষ্টের তা আরও একবার টের পেল পিএসজি। এবারে অবশ্য ভাগ্যকেই বেশি দোষ দেবে তারা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে পরিষ্কার ফেবারিট হিসেবে মাঠে নেমেও পদে পদে ভুগতে হয়েছে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটিকে। ম্যাচে বল দখলে আধিপত্য দেখালেও জার্মান প্রতিপক্ষের আক্রমণের ভয়ে তটস্থ থাকতে হয়েছে মার্কিনিওস-লুকাস হার্নান্দেজকে।
সত্যিকারের জার্মান ফুটবলটা বোধহয় এমনই। বল ধরে রাখার তাড়া নেই। তবে বল প্রতিপক্ষের পায়ে গেলে প্রেসিং করে যাওয়া। আর নিজেদের পায়ে বল থাকলে ক্ষুধার্ত বাঘের মতো আক্রমণে যাওয়া। বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের বিপক্ষে দেখালো সেই আদর্শ জার্মান ফুটবল। অন্তত প্রথমার্ধের শেষে এই কথা যে কেউই স্বীকার করবেন।
বল পজিশনে পিছিয়ে, পাসও প্রতিপক্ষের তুলনায় কম। কিন্তু গোলমুখে শট আর সুযোগ তৈরিতে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। জেডন সাঞ্চো দুবার মিস করেছেন ফুলক্রুগের ফরোয়ার্ড রান। মার্সেল সাবিতজারকে দুবার হতাশ করেছেন পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডোন্নারুম্মা। তবুও দমানো যায়নি স্বাগতিকদের।
নিকো স্লটারব্যাকের বাড়ানো লংবল অসাধারণ দক্ষতায় মাটিতে নামান নিকোলাস ফুলক্রুগ। এরপর সময় নিয়ে গোলমুখে মেরেছেন জোরালো শট। মাটি কামড়ানো সেই শট যায় জালে। ৩৬ মিনিটে লিড নেয় ডর্টমুন্ড।
ফ্যাবিয়ান রুইজ, ভিতিনহা মিলে আধিপত্য রেখেছেন মাঝমাঠে। যদিও সামনে একই পাশের বারকোলার কাছ থেকে ভাল কিছু পায়নি পিএসজি। এমবাপেকেও নিচে নামতে হয়েছে ডর্টমুন্ডের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টায়। কিন্তু স্লটারব্যাক আর মাটস হুমেলসের দুর্দান্ত রক্ষণ বিপদ বাড়ায়নি। ২৫ মিনিটের পরেই হুলিয়ান ব্রান্ড, জেডন সাঞ্চো, কারিম আদিয়েমি এবং মার্সেল সাবিতজার একইসঙ্গে ঝাপিয়ে পড়েছেন ফ্রেঞ্চ দলটির ওপর।
একাধিকবার কাছাকাছি যাওয়ার পর ৩৬ মিনিটে প্রথম গোল পায় ডর্টমুন্ড। তবে ম্যাচের রঙ দেখা গিয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে এসে। এবারও শুরুর আধিপত্য পিএসজির। এবারে অবশ্য ভাগ্যকেই বেশি দোষ দেবে তারা। ১০ সেকেন্ডের ব্যবধানে কিলিয়ান এমবাপে এবং আশরাফ হাকিমির শট গোলবারে লেগে ফিরে আসে। একেবারে কাছে গিয়েও গোলবঞ্চিত হতে হয় সফরকারীদের।
এর মিনিট খানেক পরেই ম্যাচের অন্যতম সেরা সুযোগ পেয়েছিলেন ফ্যাবিয়ান রুইজ। আচমকা রানআপে ভেঙেছিলেন প্রতিপক্ষের রক্ষণ লাইন। কিন্তু ভেসে আসা বলে হেড ঠিকঠাক করা হয়নি তার। তাতেই ম্যাচে ফেরার পথ কঠিন হয় পিএসজির জন্য।
ফুলক্রুগ ডর্টমুন্ডকে এগিয়ে দিয়েছিলেন প্রথমার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধে তিনিই মিস করেছেন দুই সুবর্ণ সুযোগ। একবার জেডন সাঞ্চোর ক্রসে আরেকবার ফ্রিকিক থেকে বল পেয়েছিলেন। তবে ছোট বক্সের মাথায় দাঁড়িয়েও দুবারই বল মেরেছিলেন গোলবারের ওপর দিয়ে।
ওসমান ডেম্বেলেকেও একাধিকবার হতাশ হতে হয়েছে। কখনো বল পোস্টে রাখতে পারেননি। আবার কখনো ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও বল ক্লিয়ার হয়েছে গোললাইনের আগে। হতাশ হওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না পিএসজির সামনে। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলে হারের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় এমবাপেদের।