বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা আজ। যথাযথ ধর্মীয় নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে দিনটি আজ উদযাপন করা হচ্ছে। অহিংসা, মৈত্রী ও শান্তির কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে বিহার ও মন্দিরে। আজ দেশজুড়ে বৌদ্ধবিহারগুলোতে বুদ্ধপূজা, প্রদীপ প্রজ্বালন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সমবেত প্রার্থনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বৌদ্ধধর্ম মতে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ—এই তিন স্মৃতিবিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত।
বুদ্ধের মূল জীবনদর্শন হচ্ছে অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সহাবস্থান করা। অহিংসবাদের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন, বৈরিতা দিয়ে বৈরিতা, হিংসা দিয়ে হিংসা কখনো প্রশমিত হয় না। অহিংসা দিয়ে হিংসাকে, অবৈরিতা দিয়ে বৈরিতাকে প্রশমিত করতে হবে।
ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের উপাধ্যক্ষ ধর্মানন্দ মহাথেরো বলেন, ধর্মীয় শান্তি শোভাযাত্রা এবং কীর্তনের মাধ্যমে সকাল থেকে আমাদের আয়োজন শুরু হবে। দুপুরে বুদ্ধপূর্ণিমার তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। বুদ্ধের অহিংস শিক্ষা দেশে দেশে মানুষের হৃদয়ে মৈত্রী ও করুণার অমিত স্রোত সঞ্চারিত করেছে। এখনো বিশ্বকে যুদ্ধের বিপর্যয় থেকে মুক্তির পথ দেখাতে পারে তাঁর অমূল্য উপদেশ।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আজ বিকেলে বঙ্গভবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এই আয়োজনে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাসহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আট শতাধিক আমন্ত্রিত ব্যক্তি অংশ নেবেন।
শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের কল্যাণে এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় মহামতি গৌতম বুদ্ধ অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও করুণার বাণী প্রচার করেছেন। হিংসায় উন্মত্ত পাশবিক শক্তিকে দমন, মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে আজকের পৃথিবীতে বুদ্ধের শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তাঝুঁকি বা হুমকি নেই।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাজধানীর বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার ও আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে দিনব্যাপী শোভাযাত্রা, প্রদীপ প্রজ্জ্বালন, প্রার্থনা আলোচনাসভাসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।