হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে শনিবার তৃতীয় ও শেষ টি ২০ ম্যাচে নাজমুলরা নেমেছিল নেমেছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে রেকর্ড গড়লেন মুস্তাফিজুর রহমান। আঁটসাঁট বোলিংয়ে তাকে দারুণ সঙ্গ দিলেন রিশাদ হোসেন। অল্পে গুটিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র। আর এভাবেই অনায়াস জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ।
টেক্সাসের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে শনিবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে সফরকারীরা জিতল ১০ উইকেটে। শেষ ম্যাচে তারা বোলিংয়ের পর দাপট দেখাল ব্যাটিংয়েও। এই সংস্করণে সবকটি উইকেট হাতে রেখে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়। এর আগে ৯ উইকেটের জয় ছিল দুটি।
যুক্তরাষ্ট্রকে স্রেফ ১০৪ রানে আটকে রেখে ৫০ বল বাকি থাকতেই টপকে যায় বাংলাদেশ। বল বাকি রেখে জয়ের হিসাবেও বাংলাদেশের রেকর্ড এটি। ২০১৪ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৮ বল বাকি থাকতে জয় পেয়েছিল তারা।
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মঞ্চটা গড়ে দেন মুস্তাফিজ। এই সংস্করণে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়ে মাত্র ১০ রানে ৬ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার। সবচেয়ে কম রান দেওয়ার রেকর্ড গড়া রিশাদ ৪ ওভারে খরচ করেন মোটে ৭ রান।
সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত হওয়ায় এই ম্যাচের একাদশে অবশ্য বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনে স্বাগতিকরা। নিয়মিত অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল, অলরাউন্ডার স্টিভেন টেলর এবং দুই ম্যাচে জয়ের নায়ক হারমিত সিং ও আলি খানকে দেওয়া হয় বিশ্রাম। দলকে নেতৃত্ব দেন অ্যারন জোন্স।
বাংলাদেশ একাদশেও আনা হয় জোড়া পরিবর্তন। দ্বিতীয় ম্যাচে বাদ পড়া লিটন কুমার দাসের সঙ্গে প্রায় ১০ মাস পর একাদশে ফেরেন হাসান মাহমুদ। তবে এদিন ওপেনিংয়ে নামানো হয়নি লিটনকে।
ছোট লক্ষ্যে নেমে তানজিদ হাসান তামিম (৫৮*) ও সৌম্য সরকারের (৩৮*) দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষকে দশ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের গন্ডিতে যাওয়ার আগে ২-১ এ সিরিজ হেরেও কিছুটা আত্মবিশ্বাস যোগাঢ় করলেন টাইগাররা। এই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেই মঙ্গলবার ম্যাচ দিয়ে টি২০ বিশ্বকাপের ‘প্রস্তুতি’ শুরু করবে বাংলাদেশ। এরপর পহেলা জুন ভারতের সঙ্গে আরেকটি গা-গরমের ম্যাচ শেষে ৮ জুন শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বিশ্বকাপ মিশন। টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়েই চারদিকে দুয়োধ্বনি চলছিল।
সব হারানোর পর অবশেষে ওপেনিংই দিল স্বস্তির বার্তা। তবে ছোট লক্ষ্য হলেও এদিন শুরুতে তানজিদ ও সৌম্যর ব্যাটিং ছিল কিছুটা নড়বড়ে। ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে তারাই গড়লেন রেকর্ড। অবিচ্ছিন্ন ১০৮ রানের জুটিতে জয় এলো ৫০ বল হাতে রেখেই। টি ২০তে তানজিদের এটি তৃতীয় ফিফটি। তার ৪২ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কা। সৌম্যর ২৮ বলের ইনিংসে রয়েছে দুটি ছক্কা ও চারটি চারের মার। স্বাগতিকরা সাত বোলার দিয়ে বোলিং করিয়েও ছিল উইকেটশূন্য।
এদিকে বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০০ উইকেট ও ১৪ হাজার রানের ডাবল স্পর্শ করেন সাকিব।
এই সংস্করণে দ্বিতীয়বার ৫ বা এর বেশি উইকেট পেলেন মুস্তাফিজ। এই কীর্তি গড়া দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার তিনি। প্রথম জন সাকিব আল হাসান। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুবার ৫ উইকেট নেওয়া বোলার ১৮ জন।
এমন বোলিংয়ের পর অনুমেয়ভাবেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মুস্তাফিজ। তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতে।