তথ্যপ্রযুক্তিখাতের পেশাদার সাংবাদিকদের নিবন্ধিত একমাত্র সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়। টানা সাড়ে ৫ ঘণ্টা ধরে সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত মত প্রকাশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বার্ষিক সাধারণ সভা।
সংগঠনের সভাপতি নাজনীন নাহারের সভাপতিত্বে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ভিশন টাওয়ার-২০২১ এর সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ভূঁইয়া মোহাম্মাদ এনাম লেনিন।
সংগঠনের বাৎসরিক কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান। এসময় তিনি প্রতি মাসে কমপক্ষে একটি করে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক করা এবং বৈঠকের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে রাখা, শুরুতেই সকল সদস্যকে সাংগঠনিক ডিজিটাল পরিচয়পত্র প্রদান, ৯টি সাব কমিটির মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে অংশগ্রহণমূলক করা এবং ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো জাতীয় ইস্যুতে গোলটেবিল আলোচনা ও সচেতনতা সৃষ্টিসহ সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের বিবরণ দেন।
প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি সংগঠনের যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আর্থিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং তা ক্যাশলেস করার ক্ষেত্রে কমিটি হতে গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় বিধি অনুযায়ী, ২০২২ সালে এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের অর্থ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পেশ করেন অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শান্ত। আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপনে অর্থসম্পাদক জানান, আমরা হিসাব নিকাশে স্বচ্ছ থাকার চেষ্টা করেছি এবং এবারের কমিটির ৯০% এর আর্থিক লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমারা যাবতীয় হিসাব-নিকাশ যথাযথ প্রক্রিয়ায় লিপিবদ্ধ করেছি। সেইসাথে আর্থিক লেনদেনের সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রমাণাদি সংরক্ষিত করা হয়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা শেষে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয় এবং বিদ্যমান নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান এনকে রয় অ্যান্ড কোং-কে দিয়ে পরবর্তী আর্থিক হিসাব নিরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই তৃতীয়াংশের বেশি সদস্যদের উপস্থিতিতে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয় আর্থিক প্রতিবেদন।
এছাড়াও সভার শুরুতেই সাংবিধানিক ধারাবাহিতা রক্ষায় কণ্ঠভোটে অ্যাডহক কামিটির করা ২০১৯-২২ বছরের অর্থ প্রতিবেদন পাস করা হয়। সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে প্রশ্ন উত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অর্থসম্পাদক। বিবিধ এজেন্ডায় সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন ও পরিমার্জন নিয়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেন সদস্যরা। এছাড়াও সংগঠনের স্বার্থ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয় এই সাধারণ সভায়।
সভাপতির বক্তব্যে নাজনীন নাহার বলেন, বার্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির ৯ জন সদস্যের মধ্যে ৬ জনই নতুন এবং প্রথমবারের মতো তারা এই কার্যনির্বাহী পরিষদে কাজ করছেন। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটিতে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি সংগঠনের সাংগঠনিক অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে। সেইসঙ্গে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতাকে নিশ্চিত করতে। একইসঙ্গে সদস্যদের মত প্রকাশ এবং সমালোচনার সুযোগকে করেছি অবমুক্ত।
বিআইজেএফ গঠনতন্ত্র হালনাগাদ করতে এর একটি খসড়া উপস্থাপন করেন সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরমান। গঠনতন্ত্র নিয়ে বিশদ আলোচনা শেষে পরবর্তীতে এ নিয়ে সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে আরও পরিমার্জিত আরেকটি খসড়া প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় অংশ নেয়া সদস্যের অধিকাংশই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বার্ষিক সাধারণ সভায় তাদের মতামত পেশ করেন। তারা সবাই আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিআইজেএফ এর বর্তমান কার্যনিবার্হী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান, প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক আসাদুজ্জামান, কার্যনির্বাহী সদস্য ইমদাদুল হকসহ সংগঠনদের অন্যান্য সদস্যরা।
সভায় জ্যেষ্ঠ সদস্য সুমন ইসলাম, মেহেদী হাসান পলাশ, হাসান বিপুল, মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউ, হাসান জাকির, হাসান শাহরিয়ার, এনামুল হক, রাহিতুল ইসলাম রুয়েল, মিজানুর রহমান সোহেল, তারিকুল ইসলাম খান বাদল, সদস্য শাহ পরান, শাহজালাল রোহান, আলাউদ্দিন আল আজাদ আলিফ প্রমুখ বক্তব্য দেন।