শিক্ষা

ঢাবিতে ত্রাণ দিতে হাজারো মানুষের ঢল, দ্বিতীয় দিনে নগদ সংগ্রহ ৮৬ লাখ

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘গণত্রাণ’ কর্মসূচিতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে শুরু করে, ট্রাক, সিএনজি, রিক্সা বা হাতে করে অসংখ্য মানুষ ত্রাণ নিয়ে আসছেন৷ নগদ অর্থের হিসেব অনুযায়ী রাত ৮টা পর্যন্ত ৮৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা নগদ সংগ্রহ করা হয়েছে। অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আসা অর্থের পরিমাণ এখনো হিসেব করা হয়নি বলে জানিয়েছেন সমন্বয়কেরা।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেল থেকেই  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা যায়। সন্ধ্যা নামার পরে ত্রাণ দেওয়া মানুষের পরিমাণ বাড়তে থাকে। আজ সকাল ৮টায় ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়ে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ চলবে।

সন্ধ্যা থেকে টিএসসি প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন পরিবহনে করে বন্যার্তদের জন্য খাবার, জামা-কাপড়, ঔষধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আসছেন। অসংখ্য মানুষ তাদের ব্যক্তিগত প্রাইভেট কারে করে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে এসেছেন। তাছাড়া বিকেলে বিজিবির একটি কাভার্ড ভ্যান ভর্তি করে ত্রাণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়।

বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সংগ্রহে দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীকে বিরামহীনভাবে কাজ করতে দেখা যায়। মাঝেমধ্যে ত্রাণের বহর খালি করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের এসব তদারকি করতে দেখা যায়।

দিনভর বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী আসায় টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া ও গেমস রুম বিকেলেই পূর্ণ হয়ে যায়। পরবর্তীতে টিএসসির বারান্দায় ত্রাণ সামগ্রী স্তুপ করে রাখা শুরু হয়। টিএসসির বারান্দাতেও ত্রাণ সামগ্রী বিশাল স্তুপ লক্ষ্য করা যায়। স্বেচ্ছাসেবকরা মানব লাইন তৈরি করে টিএসসি গেট থেকে ভেতরে ত্রাণ পৌছে দিচ্ছেন।

শুধু খাদ্যসামগ্রী নয়, সংগ্রহ করা হচ্ছে নগদ অর্থও। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেয়া তথ্য মতে রাত ৮টা পর্যন্ত৮৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা নগদ সংগ্রহ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অনলাইন মিলিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত তা এক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়া বৃহস্পতিবার গণত্রাণ কর্মসূচির প্রথম দিনে অনলাইন ও অফলাইনে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৩ টাকা এবং বিপুল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করা হয়।

এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, সাধারণ মানুষ বন্যার্তদের সাহায্যে এভাবে এগিয়ে আসবে তা কল্পনাতীত ছিলো। আমরা ভাবতেও পারিনি এত পরিমাণ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ আসবে। মানুষ যতটা পারছে সাহায্য করছে। খুব দ্রুতই ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্ত মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া হবে।

ত্রাণ পৌঁছে দিতে আসা একজন নারী বলেন, আমি আজিমপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই গণত্রাণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসেছি। নিজের যতটুকু সামর্থ্য আমি সে অনুযায়ী সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। দেশের সকল স্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছে। অসহায় মানুষের পাশে এভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে দেখে অনেক ভালো লাগছে। এই শিক্ষার্থীরাই সামনের দিনে সুন্দর দেশ গড়বে বলে আমি মনে করি।
সূএ : চ্যানেল 24
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button