তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে পিটিয়ে হত্যা করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে হলের গেস্টরুমে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
বুধবার রাত ১০টার দিকে তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহে আটক করে শিক্ষার্থীরা। এরপর তাকে কয়েক দফা পেটানো হয়। রাতে হলের ক্যানটিনে বসিয়ে তাকে ভাতও খাওয়ানো হয়। এরপর আবারও মারধর করা হয় তাকে। এ সময় ফেসবুকে তোফাজ্জলের খাওয়ার ছবি পোস্ট দিয়ে বলা হয়েছিল— হলের খাবারের স্বাদ তার ভালো লেগেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টা-৯টার দিকে ফজলুল হক হলে তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ‘চোরের গ্যাং’ শনাক্ত করতে তাকে জেরা করা হয়। তিনি কয়েকজনের ফোন নাম্বার মুখস্ত বলেন, যেগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়। এতে তাকে ‘চোর’ হিসেবে উপস্থিত ছাত্রদের সন্দেহ বাড়ে। পরে তাকে একদফা পিটুনি দিয়ে ক্যান্টিনে খাওয়ানো হয়।
পরে দ্বিতীয় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও পেটানো হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা রাত বারোটার একটু পরে এই লোককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করলে সেই শিক্ষার্থীদের আর পাওয়া যায়নি। ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, লাশ ঢামেকের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি শাহবাগ থানাকে অবগত করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কেউ চুরি করতে এলে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার কারও নেই। শিগগিরই মামলা করা হবে। আমরা সিসিটিভি ও অন্যান্য ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।