অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে অথবা সামরিক শাসনের দিকে যেতে পারে। যার পরিণতি হবে ভয়াবহ। শেখ হাসিনার শাসনের ১৫ বছর পর, বাংলাদেশে শাসন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এবং আরেকটি স্বৈরাচারী শাসনের উত্থান ঠেকানোর এমন একটি সুযোগ এসেছে যা একটি প্রজন্মে একবারই আসে।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন সেক্টরে যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা খুব সহজ নয় বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)। জনগণের আকাশচুম্বী প্রত্যাশাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে দাবি করছে সংস্থাটি।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে আইসিজি বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ‘আ নিউ এরা ইন বাংলাদেশ? দ্য ফার্স্ট হানড্রেড ডেজ অব রিফর্ম’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই মতামত জানিয়েছে।
আইসিজি’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্কার কর্মসূচির দিকে নজর দিতে চাইলে ড. ইউনূসকে রাজনৈতিক ঐকমত্য বজায় রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ বড় পরিসরে মাঠে না থাকায় বিএনপি এখন সবচেয়ে বড় হুমকি। তবে দলটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। তারা বলেছে, তারা সংস্কারের জন্য ড. ইউনূস ও তার সহকর্মীদের সময় দিতে চায়। বিএনপিকে ঠেকাতে পারে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই প্রধান সমর্থক—শিক্ষার্থী ও সেনাবাহিনী। জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভের পর বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে শিক্ষার্থীদের উত্থান হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে সংস্কার করে তা জনগণের সামনে দৃশ্যমান করে তুলতে হবে। তাহলে জনগণের সমর্থন ধরে রাখা যাবে।
অন্যথায়, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হবে। আর অন্তর্বর্তী সরকার এবার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। অথবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেলে দেশে সেনা শাসন শুরু হবে।
সকল পরিস্থিতি বিবেচনা করে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল হওয়ার জন্য অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার পরামর্শও দিয়েছে সংস্থাটি।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। কেননা, এই সরকার যতদিন ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, ততদিন নির্বাচনের দাবি আরও তীব্র হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি।
এক্ষেত্রে, রাজনৈতিক মাঠে আওয়ামী লীগ না থাকায় বিএনপিকে হুমকি হিসেবে দেখছে আইসিজি। কেননা দেশের অতীত ইতিহাসে দেখা গেছে, নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার পন্থা অবলম্বন করেছে।