বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

‘ফায়ারপাস’দেশে অটোমেটিক আগুন নেভানো যন্ত্র আনলো স্মার্টডেটা

মোহনা অনলাইন

দেশে আসলো আগুন নেভানোর এক অভিনব বিশ্বমানের নতুন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে হাজির স্মার্টডেটা নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এটি এমনই এক প্রযুক্তি যার ব্যবহার করলে কোনো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আগুন ধরবে না, ধরলেও স্বয়ক্রিয়ভাবে মুহূর্তেই নিভিয়ে দেবে এই প্রযুক্তি।

মূলত এই প্রযুক্তির নাম ”ফায়ার প্রিভেনশন অ্যান্ড সাপ্রেশন সিস্টেম” যার আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠানের নাম ফায়ারপাস টেকনোলজি। প্রযুক্তির উদ্ভাবক রাশিয়ান বিজ্ঞানী ”ইগর গেরি”।

এই প্রযুক্তিতে একটি হাইপক্সিক জেনারেটরের সাথে যে জায়গা ফায়ার প্রোটেকটিভ করা হবে তার একটি কানেকশন তৈরি করা হয়। তারপর বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় একটি অক্সিজেন অ্যানালাইজারে মাধ্যমে সার্বক্ষনিক মনিটর করা হয়। পদ্ধতিটি কোনো স্থানে আগুন লাগলে অক্সিজেনের মাত্রাকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে যা আগুন জ্বলতে বাধাগ্রস্ত হয়। ব্যবহারকারী চাইলে এই প্রযুক্তিটি দূরে থেকৈ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফায়ারপাস টেকনোলজির উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি ডেটা সেন্টার, মিউজিয়াম, আর্কাইভ, সাবস্টেশন, ওয়্যারহাউস, বড় বিল্ডিং, টানেল অ্যারোস্পেস, নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহারযোগ্য।

শিমুল পারভেজ, সিনিয়র টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট, স্মার্টডাটা বলেন, যে কোনো সিলড (বদ্ধ) রুমে অক্সিজেনকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রন করা হয় যাতে ক্যামিক্যাল রিয়েশন না হয়, ফলশ্রুতিতে কোথাও ঐ জায়গায় আগুন লাগবে না।

ইসহাক ইবনে খান জুয়েল, ম্যানেজার (সেলস) ডেটা সেন্টার সল্যুশন, স্মার্টডেটা বলেন, এই প্রযুক্তিটি একটি প্রোঅ্যাক্টিভ প্রযুক্তি। এই পদ্ধতি প্রয়োগকৃত জায়গায় আগুন লাগতেই দিবে না। কেউ যদি বাহিরে থেকে আগুন জ্বালানোর জন্য ভিতরে নিয়ে যায়, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিভে যাবে। তিনি বলেন, প্রচলিত আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে (সাপ্রেশন সিস্টেমে) অনেক ক্যামিক্যাল ব্যবহার করা হয় যা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিকর এবং পুনর্ব্যবহারের খরচ অনেক। কিন্তু ফায়ারপাসের এই পদ্ধতিতে পুনর্ব্যবহারের কোনো খরচ নেই, একবার প্রযুক্তিটি কোথাও স্থাপন ব্যবহারকারী যতদিন চাইবে ততদিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফরিদ উদ্দিন, বিজনেস কনসালটেন্ট, স্মার্টডাটা বলেন, ফায়ার পাসের এই প্রযুক্তিতে কোথাও আগুন লাগবে ২-৩ সেকেন্ডের মধ্যেই নিভিয়ে দিবে। যেহেতু এই প্রযুক্তি বাতাসের সাথে সম্পৃক্ত থেকে ফায়ার সাপ্রেশন সিস্টেম তৈরি করে আগুন নেভায় তাই এর প্রযুক্তির ব্যবহার আনলিমিটেড।
অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তিটি ১৬ তম এশিয়াফার্মা এক্সপোতে প্রদর্শন করা হয়।

ফায়ার প্রিভেনশন এই সিস্টেমটি ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আবিষ্কৃত হয় পরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ দক্ষিণ আফ্রিকা ও সৌদি আরবে ব্যবহার করা হয়। আর্ন্তজাতিকভাবে সার্টিফাইড অত্যাধুনিক এই সিস্টেমটি দেশের বাজারে এনেছে স্মার্টডাটা নামের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ।

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, শুধুমাত্র ২০২৪ সালে সারাদেশে ২৬ হাজার ৬৫৯টি এবং দিনে গড়ে ৭৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশে এই অগ্নিকাণ্ডে ৪৪৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুনের ঘটনায় ৩৪১ জন আহত ও ১৪০ জন নিহত হয়েছেন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button