জাতীয়

সেলিম প্রধানের ৮ বছর কারাদণ্ড

মোহনা অনলাইন

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানের

আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, রায় দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি

দূর করা সম্ভব না। তাই দুর্নীতিবাজদের সাথে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেবেন না। জেনে শুনে দুর্নীতিবাজদের

কারোর দাওয়াতে যাওয়া মানে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেয়া। দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

 

রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক বদরুল আলম পৃথক দুই ধারায় এ রায় ঘোষণা করেন।

এদিন রায় শুনতে সেলিম প্রধানের রাশিয়ান স্ত্রী আদালতে উপস্থিত হন। রায় ঘোষণার আগে কারাগার থেকে

সেলিম প্রধানকে আদালতে নেয়া হয়। রায় ঘোষণা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।

 

মানিলন্ডারিং আইনে সেলিম প্রধানকে চার বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন

আদালত। অনাদায়ে তাকে আরো ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে। আর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের

অভিযোগে দুদক আইনে চার বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। অনাদায়ে

আরো এক মাসের কারাভোগ করতে হবে। দুই ধারার সাজা একসাথে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির মাধ্যমে ও ক্যাসিনো খেলে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। ক্যাসিনো খেলে অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাচার করেছেন থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে।

সেলিম জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। এই কোম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এই টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে। প্রিন্টিং পেপার্স কোম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা। ২০১১ সালে মুনাফা করে এক কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে আট কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে এই কোম্পানি থেকে কিভাবে ঋণ গ্রহণ করেছেন এ সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র নেই তার কাছে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে সেলিম প্রধান র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। ওই বছরের ২৭ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এই উপ-পরিচালকই মামলাটি তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত তার নামে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পান। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো: আসিফুজ্জামানের আদালত সেলিমের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button