বর্তমান বিশ্বে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েল ফিলিস্তিন যুদ্ধ। মুহুর্মুহু ইসরায়েলি হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিরা জীবন বাঁচানোর জন্য হাহাকার করছে।
বর্তমানে ফিলিস্তিনের বুকে রাজত্ব করে চলছে ৭ লাখ দখলদার। দেশটির অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে এ সব দখলদারের বসবাস। ফিলিস্তিনের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশই হলো বসতি স্থাপনকারী। দেশটির মোট জনসংখ্যা হলো ৭০ লাখ। এ হিসেবে সেখানে রাজত্ব করছে ৭ লাখ দখলদার।
বসতি স্থাপনকারীরা মূলত ইসরাইলের নাগরিক। আর ফিলিস্তিনের দুই অঞ্চলে তাদের আবাসস্থলের বেশিরভাগই সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। পশ্চিম তীরের প্রায় ৪০ শতাংশ জমিই বর্তমানে বসতি স্থাপনকারীদের হাতে। তবে বসতিগুলো ইসরাইল সরকারের অনুমোদিত হলেও ঘাঁটিগুলো সরকারি কোনো অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপন করাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই আল্ট্রাঅর্থোডক্স ইহুদি। তাদের বড় অংশ ধর্মীয় কারণে সেখানে চলে এসেছে। এ ছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয় কম ও সরকারি প্রণোদনার কারণেও তাদের একটি অংশ এখানে চলে এসেছেন। তবে সম্প্রতি এসব বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বেড়েছে।
১৯৬৭ সালের জুন মাসে ছয় দিনের যুদ্ধে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করার পরপরই বসতি স্থাপন শুরু করে ইসরাইল। একই বছরের সেপ্টেম্বরে পশ্চিম তীরের হেব্রনে ইটজিয়ন ব্লক ছিল ইসরাইলিদের নির্মাণ করা প্রথম বসতি। বর্তমানে এই বসতিতে ৪০ হাজার মানুষ বাস করছেন।
ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপনকারীদের ইসরায়েল সরকার সরাসরি অর্থায়ন করে। এ ছাড়া পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশই তারা নিয়ন্ত্রণ করে। এ অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের নির্মাণ সীমাবদ্ধ। এ বিষয়ে প্রতিবেদন ও নিরীক্ষণের জন্য বসতি স্থাপনকারীদের প্রতিবছর প্রায় ২০ মিলিয়ন শেকেল (৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার) দেওয়া হয়। ইসরায়েলের অর্থায়নে সেখানে অর্থ পরিদর্শক নিয়োগ থেকে শুরু করে ড্রোন, আকাশ প্রতিরক্ষা, ট্যাবলেট ও যানবাহনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা হয়।
আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে থাকা ইসরায়েলের সব ঘাঁটি ও বসতি অবৈধ। এসব স্থাপনা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের স্পষ্টত লঙ্ঘন। চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনে দখলকৃত এলাকায় নিজেদের জনসংখ্যা স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।