রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো যাতে নৈতিক ভাবে কর্মী প্রেরণ করতে পারে এজন্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। অচিরেই রিক্রুটিং এজেন্সি গুলোকে সিআইপি সম্মাননা প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সি গুলোকে তাদের মান অনুযায়ী শ্রেণি বিন্যাস করা জরুরী। যাতে যোগ্য এজেন্সি গুলোকে পুরস্কৃত করা সহজ হয়। আমাদের দেশের একটা শিক্ষিত অংশ জেনে বুঝে অবৈধভাবে ইউরোপ যেতে চায়। তারা যাতে যেনতেন ভাবে মৃত্যু ঝুঁকিনিয়ে বিদেশ নাযায় সেজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরী।
গত ৩১ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার ঢাকার এফডিসিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এসব কথাবলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সীজ (বায়রা) সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার ও বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হেলভেটাস বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচাকল মো. আবুল বাশার। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় সরকারি বাঙলা কলেজ ও রানার আপ হয় প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি। শ্রেষ্ঠ বক্তা হওয়ার গৌরব অর্জন কওে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির বিতার্কিক প্রিয়া দেব।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন,নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বায়রা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়, সিভিল এভিয়েশন, ইমিগ্রেশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকল প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বশীলভ‚ মিকাপালন করতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর উপর দায় চাপালেই চলবেনা। যারা বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছে তাদেরকে সঠিক ভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে জেনে শুনে বুঝে বিদেশে যাওয়া উচিৎ। কর্মস্থলে গিয়ে নিয়োগ কর্তার ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ করা ঠিক নয়। আমরা দেখেছি আমাদের অনেক কর্মীরা ভালো বেতনে স্বল্প খরচে বিদেশে গিয়েও কর্মস্থল থেকে পালিয়ে অবৈধ ভাবে অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। ভ‚মধ্য সাগর দিয়ে জাহাজে করে ইউরোপ, ইটালিসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করছে। কর্মীর এসব অপ্রত্যাশিত ঘটনায় দায় পড়ছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর উপর। যারা বৈধভাবে টুরিস্ট, স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বডি কন্টাক্টের মাধ্যমে মালয়েশিয়া, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে অবৈধ হয়ে পড়ছে, তা ঠেকাতে না পারলে দেশের বদনাম বাড়তে থাকবে। এমন কি অবৈধ ভাবে কর্মী যওয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকলে লেবার রিসিভিং কান্ট্রি গুলো আমাদের কাছ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দিতে পারে।
তিনি যেসকল রিক্রুটিং এজেন্সি গুলো নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে বিদেশে কর্মী প্রেরণ করছে সেই সকল প্রতিষ্ঠান গুলোকে পোশাক শিল্প মালিকদের মতো আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার দাবী জানান। বাংলাদেশ থেকে পোশাক, চামড়া, পাটজাত পণ্যসহ বেশির ভাগ রপ্তানি আয়ের উপর সরকার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করছে। তাহলে কেন একজন রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী প্রেরণ করে বৈদেশিক মূদ্রা উপার্জনে মুখ্য ভুমিকা পালন করলেও তাকে কেন প্রেরিত কর্মীর ওপর প্রণোদনা প্রদান করা হবেনা ? সিআইপির মর্যাদা দেয়া হবেনা? সরকারের স্টিমুলাস প্যাকেজের মধ্যে কেন রিক্রুটিং এজেন্সি গুলো যুক্ত হতে পারবেনা ? কেন স্বল্প সুদে ঋণ পাবেনা ? কেন সরকারি ভাবে ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণে স্বল্প মূল্যে জমি পাবেনা ? তাই অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরো গতিশীল করে প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে রিক্রুটিং এজেন্সি তথা বায়রাকে শক্তিশালি করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে বলে উল্লেখ করেন জনাব কিরণ।প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলকে ট্রফি, সনদপত্র ও পুরস্কার হিসেবে যথাক্রমে ১ লক্ষ ও ৭৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হয়। শ্রেষ্ঠ বক্তাকে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক সেলিম মালিক, ডক্টর মুহাম্মদ শাহআলম চৌধুরী ও সাংবাদিক আরাফাত আরা।