লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে প্রায় ছয় দশক ধরে পেটে ভ্রূণ ধারণ করেছিলেন ৮১ বছর বয়সী এক নারী। চিকিৎসাবিজ্ঞানের চেনা নিয়ম বলে, মাতৃজঠরে সন্তান ধারণের সময়সীমা কমবেশি ১০ মাস। কিছু ক্ষেত্রে নিয়মের সামান্য এদিক-ওদিক ঘটতে পারে, তাই বলে ৫৬ বছর এক বিরল ঘটনা।
চিকিৎসা বিজ্ঞানকে ‘চমকে’ দিয়ে প্রায় ৬ দশক ধরে গর্ভে সন্তান ধারণ করে রাখলেন ৮১-এর মহিলা! এ ঘটনা জানার পর ওই নারীর অস্ত্রোপচার করানো হলে তার মৃত্যু হয়। সাত সন্তানের জননী ড্যানিয়েলা ভেরার গর্ভে যে ভ্রূণ ছিল তা তিনি বুঝতে পারেননি।
হঠাৎ একদিন ব্রাজিল থেকে প্যারাগুয়ে যাওয়ার সময় পেটে প্রবল যন্ত্রণা অনুভব করে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন ডেনিয়েলা। পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন অবাঞ্ছিত কিছু আটকে রয়েছে তার পেটে। এক্স-রে তে ধরা পড়ে দীর্ঘ ৫৬ বছর ধরে পাকস্থলীতে মৃত ভ্রূণ বহন করে চলেছেন বৃদ্ধা।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে গত ১৪ মার্চ অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। ভ্রূণ বের করা সম্ভব হলেও পরদিন মৃত্যু হয় ডেনিয়েলার। তার চিকিৎসক পেট্রিক ডেজিরেম বলেন, অস্ত্রোপচারের পর সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হয়েছে ডেনিয়েলার।
এই বিরল ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে চিকিৎসক বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মায়ের গর্ভের পরিবর্তে অন্যত্র বাড়তে থাকে ভ্রূণ। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম ‘একটোপিক প্রেগন্যান্সি’। এক্ষেত্রে নিষ্কাশিত ডিম্বাণু তার নির্দিষ্ট জায়গা পরিবর্তে অন্যত্র চলে যায়। যেখানে সেই ভ্রূণের বেড়ে ওঠার কোনও সম্ভাবনা নেই। ডেনিয়েলার ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই হয়েছিল।