আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস। মুসলমানদের প্রথম কেবলা পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস দখলমুক্ত করার আন্দোলনের প্রতীকী দিন এটি। প্রতি বছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবার পালিত হয়ে থাকে এ দিবস।
১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল বায়তুল মুকাদ্দাস দখল করে আছে। বিশ্বজুড়ে দিনটি এমন এক সময় পালিত হতে যাচ্ছে যখন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক হামলা অব্যাহত রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা উপত্যকা এবং জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে মজলুম ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নতুন করে গণহত্যা শুরু করে।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী গাজায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজার ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন আহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। পবিত্র নগরী আল কুদস বা বায়তুল মুকাদ্দাস হচ্ছে পবিত্র মক্কা মু‘আযযামা ও মদিনা মুনাওয়ারার পরে ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান; যেখানে অবস্থিত ইসলামের প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা।
হজরত রাসুলে আকরাম (সা.) মক্কার মসজিদুল হারাম, মদিনার মসজিদুন্নবী ও বায়তুল মুকাদ্দাসের মসজিদুল আকসার উদ্দেশে সফরকে বিশেষভাবে সওয়াবের কাজ বলে উল্লেখ করেছেন।
বায়তুল মুকাদ্দাস ও তার আশপাশের এলাকা তথা সমগ্র ফিলিস্তিন ভূখণ্ড বহু নবী-রাসূলের (আ:) স্মৃতি বিজড়িত এবং কুরআন মজিদে এ পুরো ভূখণ্ডকে ‘আর্দে মুকাদ্দাস্’ বা ‘পবিত্র ভূমি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য মসজিদুল আকসা, বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিনে পবিত্র নামগুলো মুসলমানদের ঈমান ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী ও উপনিবেশবাদী চক্র সাম্প্রদায়িক ইহুদি জায়নিস্টদের ইন্ধন জুগিয়ে ফিলিস্তিনের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা একের পর এক গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে এবং মুসলমানদের বর্বরোচিতভাবে শহর ও গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করছে।
ফিলিস্তিন জবরদখলদার সাম্প্রদায়িক ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম ও যুদ্ধ করে চলেছে। প্রতিবাদ করে আসছে বিশ্ববাসী।
ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয়ী হওয়ার পর ইমাম খোমেনি (র.) ফিলিস্তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে রমজান মাসের শেষ শুক্রবার আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস পালনের আহ্বান জানান। সেই থেকে মুসলমানদের প্রথম কিবলা পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসকে দখলমুক্ত করার আন্দোলনের প্রতীকী দিন হয়ে আছে এটি। ইমাম খোমেনির আহ্বানে ১৯৭৯ সালে ইরানে প্রথম শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস।
এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ। আজ বিশ্বের নানা দেশে দিবসটি পালিত হবে।