বন্দিদশায় বিষাদময় ঈদ; মুক্তির অপেক্ষায় নাবিকরা
সোমালিয়া উপকূলেই বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ভেতরেই বন্দিদশায় এক বিষাদময় পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করতে হবে ২৩ নাবিককে। সোমালিয়ার জলদস্যুরা যতই দুম্মার মাংস খেতে দিক না কেনো সেটা কোন খুশির উপলক্ষ্য বয়ে আসবে না। মনটা বরং কাঁদবে দেশে অনিশ্চতায় থাকা স্বজনদের জন্য। কিন্তু অপেক্ষা করা ছাড়া আর কীইবা করার আছে নাবিকদের!
জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলে এখনও জিম্মি। জাহাজটি মুক্ত হলে যত দ্রুত সম্ভব যেন নাবিকদের ফিরিয়ে আনা যায়, সে জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জাহাজের মালিকপক্ষ। এরই মধ্যে মুক্তির পর নাবিকেরা কোথা থেকে সাইন অফ বা জাহাজের কর্ম হতে অব্যাহতি করবেন, তার তালিকা জাহাজের ক্যাপ্টেনকে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মালিকপক্ষের নির্দেশনার পর জাহাজের ২৩ নাবিকের মধ্যে ১৮ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে সাইন অফ করবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বাকি পাঁচজন জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে সাইন অফ করবেন।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নেওয়ার ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা মুক্তিপণের জন্য জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। নানা পর্যায়ে দর-কষাকষির পর দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতার অগ্রগতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মালিকপক্ষ। তবে এখনও চূড়ান্ত সমঝোতার কথা স্বীকার করেনি তারা। মালিকপক্ষ বলছে, মুক্তির জন্য আর বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। শিগগিরই মিলবে সুখবর!
জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে দস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজটি মুক্ত হলে প্রথমে নেওয়া হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বন্দরে। সেখানে কয়লা খালাস করে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসার কথা রয়েছে। এ কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে কারা সাইন অফ করবেন, তাদের তালিকা প্রস্তুত করছে মালিকপক্ষ। যতজন নাবিক সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে নেমে যাবেন, সমানসংখ্যক নাবিক বাংলাদেশ থেকে সেখানে পাঠানো হবে। নতুন নাবিকেরা যোগ দেবেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে। এরপরই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরিয়ে আনা হবে জাহাজটি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, জাহাজটি মুক্ত হলে কখন কী করতে হবে, তার আগাম পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মালিকপক্ষ এমন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। এমন পরিকল্পনার অর্থ হলো, জাহাজটি মুক্ত হওয়ার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়।