রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার একটি গ্রামে গতকাল সোমবার বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের ৬০ থেকে ৭০টি বাড়িতে বৃষ্টির জন্য গান গাওয়া শেষে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। বিয়ে শেষে সন্ধ্যায় ছিল খাওয়াদাওয়ার আয়োজন।
আয়োজকেরা জানান, তীব্র গরমে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, চাষাবাদের জন্যও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। অতিরিক্ত সেচের কারণে ফসলের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। এ কারণে যাতে বৃষ্টি হয়, সে জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
উপজেলার তাতারপুর গ্রামের ইউসুফ আলী ও হাবিবা খাতুন নামের দুই শিক্ষার্থীর উদ্যোগে এই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী অনেক বছর ধরে এই প্রথা চালু আছে। অনাবৃষ্টি হওয়ায় এই গ্রামের সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ে দেয়। আমাদের কাছে এক প্রকার বিশ্বাস, ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টি হবে। সেই আশাতেই ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে ভগবানের কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হয়েছে।’ তাঁরা নেচে-গেয়ে আবির মেখে সারা গ্রামে ঘুরে বেড়ান। এরই মধ্যে ইউসুফ আলী ও হাবিবা খাতুন ব্যাঙ বর-বধূকে কলাগাছের খোলের মধ্যে ভরে বাউকে (বাঁশের বাতার তৈরি) নিয়ে ঘোরেন।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৪ এপ্রিল মাত্র দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত ৩০ মার্চ রাতে রাজশাহীতে মাত্র ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। রাজশাহীতে টানা ২৩ দিন বলতে গেলে বৃষ্টিই হয়নি। এ অবস্থায় তাপমাত্রাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দুই দিন ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অবস্থায় মানুষের বাড়ি থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ অনেকটা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
পরে ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে একটি প্রতীকী পুকুর খনন করে সেখানে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন। সন্ধ্যায় গ্রামের মণ্ডলপাড়ায় ওসিমুদ্দিন মণ্ডলের আমবাগানে ভোজের আয়োজন করা হয়।