ঢালিউডের সোনালি যুগের নায়ক সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় মামলার রায় আজ। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী এই রায় ঘোষণা করবেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২৫ বছর আগে খুন হওয়ার পরের বছর আশীষ রায় চৌধুরীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। মামলায় আসামিরা হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, ফারুক আব্বাসী,আদনান সিদ্দিকী, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
২০০১ সালে বিচার শুরুর আদেশ হয়। এক আসামি ওই আদেশ চ্যালঞ্জ করে উচ্চ আদালতে গেলে আটকে যায় বিচারকার্য। এরপর উচ্চ আদালতের আদেশে আবার বিচারকার্য ২০২২ সালে শুরু হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি। সবশেষ ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার নথি বিচারিক আদালতে ফেরত আসলে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেন বিচারিক আদালত। বিচার চলাকালে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও সোহেল চৌধুরীর মধ্যে বিরোধ ছিল। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মির্জা মাহাফুজ আদালত ও পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবে যান তিনি। তখন ক্লাবে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ তার স্ত্রীকে গান গাইতে বলেন। অন্যদিকে সোহেল চৌধুরী ও তার কয়েক বন্ধু গান থামাতে বলেন। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী ও তার দলের লোকজন মাহাফুজের টেবিলের সামনে আসেন। তখন তারা আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পাশে বসা এক নারীকে উঠে আসতে বলেন। ওই নারী না উঠলে সোহেল চৌধুরী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে যান।
কপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী আজিজের ওপর খেপে যান। তখন সোহেলের বন্ধু কালা নাসির আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গুলি করতে যান। এ সময় ক্লাবের বাথরুমে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। এই ট্রাম্প ক্লাবের মালিকানা ছিল বান্টি ও আশীষের। বিরোধের শুরু এখান থেকেই।
সোহেল চৌধুরীকে কীভাবে গুলি করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে অভিযোগপত্রে বলা হয়, সেদিন সোহেল চৌধুরী ক্লাবে ঢুকতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁকে ক্লাবে ঢোকার অনুমতি না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে রাত তিনটার দিকে সোহেল চৌধুরী আবার ক্লাবের সামনে আসেন। তখন পেশাদার খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সোহেলের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাই, বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর আগের ঝগড়ার জেরে তাঁকে ঠান্ডা মাথায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।