বরিশালে নাম জানতে চাওয়ায় নার্সকে পেটালো পুলিশ
বরিশাল শের-ই- বাংলা নগর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্সকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে । বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে
নার্সরা হাসপাতাল পরিচালকের কার্যালয়ে সমবেত হয়ে বিক্ষোপ করছেন।
তবে এ বিক্ষোপে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কোন অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছেন , স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান।
জানাযায়, হাসপাতালের সার্জারি -১ ওয়ার্ডে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে সালাউদ্দিন নামে এক ট্যুরিস্ট পুলিশের একজন ইন্সপেক্টর ভর্তি হন। ভর্তির শুরুতে জরুরি বিভাগে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলাম
তার নাম পরিচয় জানতে চাইলে সঙ্গে আসা লোকজন ক্ষিপ্ত হয় । এরপর তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জরুরি বিভাগের টিকেট কাউন্টারের দরজা লাথি দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে এবং স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলামকে বেদম মারধর করে ।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের একটি অ্যাম্বুলেন্সে ইন্সপেক্টর সালাউদ্দিনসহ আরও কয়েকজন আসেন। তারা প্রথম থেকেই পুলিশ পরিচয় দিয়ে উগ্র ব্যবহার শুরু করেন। রোগীর নাম-ঠিকানা না বলা হলে কোনোভাবে তাকে ভর্তি করা যায় না জরুরি বিভাগে। এসব বলার পর পুলিশ পরিচয় দেওয়া লোকজন নার্স সাইফুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে জরুরি বিভাগের লোকজনই ওই নার্সকে মুমূর্ষু অবস্থাই সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। একই সঙ্গে ভর্তি করা হয় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যকে।
এ বিষয়ে স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলাম জানান, রোগীর নাম জানতে চাইতেই ২-৩ জনে মিলে রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। মোট ৬-৭ জনের মধ্যে ওই দুই-তিন জনই আমাকে চেয়ার দিয়ে পেটায় এবং কিল ঘুষিও মারে।
আহত ট্যুরিস্ট পুলিশের বরিশাল জোনের পরিদর্শক সালাউদ্দিন মামুন বলেন, গতরাতে বরিশাল নগরীর রুপাতলী এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় একটি বেপরোয়া গতির অ্যাম্বুলেন্স আমাকে ধাক্কা দেয়। এতে আমি অচেতন হয়ে পাশের ডোবায় পড়ে যাই। পরে আমার সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে অচেতন থাকায় শেবাচিম হাসপাতালের বিষয়টি রাতে আমি জানতে পারেননি। আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের জোন ইনচার্জ পরিদর্শক বুলবুল আহম্মেদসহ কয়েকজন ছিলেন।
এদিকে, পরিদর্শক বুলবুল আহম্মেদ হামলার সময় থাকলেও তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলবেন না বলে জানান।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এনামুল হক বলেন, আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। যারা নার্সের ওপর হামল করেছে, তাদের শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়া হবে।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা: মনিরুজ্জামান শাহীন জানান এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।