ইসরায়েলি তান্ডবে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এবার রাফায় হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েল। ফলে শহরটি ছেড়ে পালিয়েছেন ৬ লাখ ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন, অব্যাহত ইসরায়েলি স্থল অভিযানে গত ৬ মে থেকে এ পর্যন্ত ৬ লাখ রাফাবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বিবিসি।
আল জাজিরা বলেছে, গত ৬ মে থেকে রাফার প্রায় ৬ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই পরিসংখ্যান সামনে এনেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘গত ৬ মে থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ মানুষ – যা গাজার মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ – রাফাহ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। কারণ সেখানে ইসরায়েলি স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
উপরন্তু জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় দক্ষিণ গাজার এই শহর থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার বিষয়েও আপডেট তথ্য দিয়েছে।
আপডেটে বলা হয়েছে, ‘গত ১৪ এবং ১৫ মে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উত্তর গাজার ১৯টি এলাকার বাসিন্দাদের সমস্ত বা আংশিক স্থানান্তরে দুটি নতুন আদেশ জারি করেছে। এতে করে রাফা এবং উত্তর গাজায় গত ৬ মে থেকে জারি করা আদেশের সংখ্যা পাঁচে পৌঁছাল।’
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬ মে থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া প্রায় ৬ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার মানুষ গত ৪৮ ঘণ্টায় রাফা থেকে পালিয়ে গেছেন। মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাতে স্থল সৈন্য পাঠানোর কাজ অব্যাহত রেখেছে।
গাজায় সাত মাস যুদ্ধের পর ইসরায়েল জোর দিয়ে বলছে, রাফা দখল এবং হামাসের শেষ অবশিষ্ট ব্যাটালিয়নগুলোকে নির্মূল করা ছাড়া ‘বিজয় অর্জন’ অসম্ভব। কিন্তু জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো সতর্ক করে বলেছে, রাফাতে সর্বাত্মক হামলা হলে ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে এবং মানবিক বিপর্যয় প্রকট আকার নিতে পারে।
এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ায় তীব্র লড়াই হয়েছে বলে ইসরায়েলি বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি দলগুলো বলছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জাবালিয়ার শরণার্থী শিবিরে ‘বিপুল সংখ্যক সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে হামাস বলেছে, তারা বেশ কয়েকজন সৈন্যকে হত্যা করেছে। এমন অবস্থায় গত শনিবার থেকে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক জাবালিয়া ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সেসময় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছিল, তারা এই এলাকায় পুনরায় প্রবেশ করবে কারণ হামাস সেখানে পুনরায় সংগঠিত হয়েছে।