হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। দুর্ঘটনায় রাইসির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা।
প্রেসিডেন্ট রাইসির মর্মান্তিক মৃত্যুতে মর্মাহত হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে ইরানি প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর সমবেদনা এবং সহানুভূতি প্রকাশ করে শোক পালনের কথা জানিয়েছে পাকিস্তান।
সোমবার (২০ মে) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ভেনিজুয়েলা থেকে আন্তরিক সমবেদনা জানিয়ে নিকোলাস মাদুরো আরও লিখেছেন, ‘আপনি ও ইরান, মর্যাদা, নৈতিকতা ও প্রতিরোধের উদাহরণ।’ দীর্ঘ দিন ধরে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের বৈরী সম্পর্ক চলে আসছে। ইব্রাহিম রাইসি ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় প্রতিবেশীদের পাশাপাশি চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছিলেন।
এক্সে দেওয়া এক বার্তায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি বলেছেন, ‘বেদনাদায়ক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মৃত্যুতে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা এবং তাদের জন্য মহান আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য ধৈর্য ও সান্ত্বনার জন্য করুণা ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তার কাছেই ফিরে যাব।’
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ শিয়া আল-সুদানী এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গভীর দুঃখ এবং গভীর বিষাদের সাথে আমরা দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনার ঘটনায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান এবং তাদের সঙ্গীদের মৃত্যুর দুঃখজনক সংবাদ পেয়েছি। বেদনাদায়ক এই ট্র্যাজেডির সময় আমরা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি এবং ইরানি জাতি, দেশটির সরকার ও জনগণের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করছি।’
এদিকে ইরানের সঙ্গে ‘পূর্ণ সংহতি’ প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মৃত্যুর পরে ইরানি জনগণের সঙ্গে ‘বেদনা ও দুঃখ’ ভাগ করে নিচ্ছে এবং ইরানের সাথে ‘পূর্ণ সংহতি’ প্রকাশ করেছে।
হামাস আরও বলেছে, প্রয়াত ইরানি কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে এবং গাজার চলমান যুদ্ধ বন্ধ করার প্রচেষ্টাসহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের জন্য ‘সম্মানজনক অবস্থান’ নিয়েছিলেন।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এই বিরাট ক্ষতির প্রভাব কাটিয়ে উঠবে বলে আমরা আত্মবিশ্বাসী; ভ্রাতৃপ্রতিম ইরানি জনগণের এমন কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যা এই গুরুতর সংকট মোকাবিলা করতে পারে।’
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে কিজ কালাসি এবং খোদাফারিন বাঁধ দুটি উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন স্থানীয় সময় গতকাল রবিবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।