পর্যাপ্ত ঘুম সুস্বাস্থ্যের অন্যতম চাবিকাঠি। প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন আট ঘণ্টা ঘুম শুধু আমাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে না; বরং এটি সামগ্রিকভাবে প্রভাব ফেলে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে। কিন্তু প্রয়োজনীয় এই ঘুমে ব্যাঘাত দেখা দিলে আমাদের জীবনে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা জীবনকে করে তোলে আরও দুর্বিষহ।
এর মধ্যে প্রায় মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায় অনেকের। কিন্তু কী কারণে ঘুম ভাঙে তা কেউ ঠিক বুঝতে পারে না। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেন থেকে জানা যায় মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়াকে ডাক্তারি ভাষায় বলে ‘আনকনশাস ওয়েকফুলনেস’ বা ‘করটিক্যাল অরৌসল’।
এক্ষেত্রে সাধারণত নারীরা তন্দ্রার মধ্যে থাকেন। হঠাৎ করে কোনো শব্দ শুনে বা অস্বস্তির কারণে নারীদের ঘুম ভেঙে যায়। কখনও কখনও ঘুমের মধ্যে বুকের ভিতরটা ধক করে উঠেও ঘুম ভেঙে যায়। কারও কারও আবার একটা নির্দিষ্ট সময়েই ঘুম ভাঙে। আর ঘুম ভেঙে দেখে অনেক চিন্তার মাথায় এসে ভিড় করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়াটা স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ মারাত্মক। প্রধানত শ্বাস প্রঃশ্বাসে বাধা পাওয়ার কারণেই ঘুম ভেঙে যায়। এর ফলে ব্যথা, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অস্বস্তি, ট্রমা, গা গরম অথবা খুব ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে। রাতে হঠাৎ ঘুম ভাঙার সমস্যা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে।
সমীক্ষা বলছে, ঘুম ভাঙার এই সমস্যা বাড়তে শুরু করার অর্থ হার্ট এবং রক্ত চলাচলের সমস্যা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়তে থাকে এবং এই সমস্যা প্রধানত হয় নারীদের।
মনোবিদরা বলেন, রাতের ঘুমে ব্যাঘাত না ঘটানোর কয়েকটি কৌশল রয়েছে সেগুলি একটু মেনে চললেই সমস্যার সমাধান করা যায়।
১. প্রতিদিন শরীরচর্চা করলে রাতে ভালো ঘুম হয়। প্রয়োজন নিয়মিত মেডিটেশন করাও।
২. সমস্যা অতিরিক্ত হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। রাতে কফি বা কোনো নেশা করা যাবে না।
৩. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি ৫০ জনে একজন ঘুমের ব্যাঘাতের কারণে প্রাণ হারান।
৪. সেক্ষেত্রে প্রধানত হার্টের রোগই ধরা পড়ে। তাই রাতে শব্দহীন ঘরে ঘুমোন। আয়ুর্বেদিক ম্যাসাজ, যোগাসন ইত্যাদির সাহায্যেও ঘুম আনা যায়।
৫. তবে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন মানসিক শান্তি। উদ্বেগ, অবসাদ, চিন্তা ইত্যাদি থাকলে মনোবিদের সাহায্য নিন।
৬. মনের অসুখের কারণে দেহের অসুখ শুরু হলে কিন্তু আখেরে ক্ষতি আপনারই।