বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ৮৩টি জমির দলিল ও ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ আদেশ আমলে নিয়ে শিগগিরই বেনজীরসহ সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করবে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান টিম। এ ঘটনার পর দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
দুদকের প্রধান আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান জানান, দুদক আইন ও বিধিমালা এবং মানিলন্ডারিং আইন ২০১২ এর ক্ষমতাবলে আদালত বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং তাদের নামে থাকা জমির দলিল জব্দ করেছেন। এখন তারা এগুলো ট্রান্সফার করতে পারবেন না। এগুলো সবই করা হয়েছে অনুসন্ধান কাজের অংশ হিসেবে। এখন পরবর্তী অনুসন্ধানের প্রয়োজনেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে।
গত ৩১ মার্চ একটি পত্রিকায় বেনজীরের ঘরে ‘আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, যেখানে তার অর্থ-সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এ ছাড়া তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানে রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠা জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেন সংসদ সদস্য, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।