ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার খুন হওয়ার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও খুঁজে পাওয়া যায়নি তার মরদেহ। সময় যত গড়াচ্ছে, বেরিয়ে আসছে লোমহর্ষক, হাড়হিম করা সব তথ্য। যা অনেকের কাছেই কল্পনারও বাইরে। রানিং একজন এমপিকে এতো নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা এর আগে কবে ঘটেছে, তা বলতে পারছে না কেউ।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি বলছে, এমপি আনারকে অ্যাপার্টমেন্টে খুন করার পর মৃতদেহ থেকে চামড়া ছাড়িয়ে শরীরে মাংস আলাদা করে নেয় খুনিরা। শরীরের মাংস এমনভাবে টুকরো করা হয় যাতে তাকে চেনা না যায়। মাংস-খণ্ডগুলো প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটে ভরা হয়। হাড়ও ছোট টুকরো করা হয়। এরপর হাড় ও মাংসগুলো আলাদা করে বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে শহর জুড়ে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির বরাত দিয়ে করা এনডিটিভির প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডের আরো জানিয়েছে, মুম্বাইতে বসবাসকারী বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। কারণ, এমপি আনারকে হত্যা ও টুকরো টুকরো করার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন জিহাদ হাওলাদার।
মূলত তাকে গ্রেপ্তারের পরই জানা গেছে, এমপি আনারকে কীভাবে, কতদিন ধরে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়। হত্যার পর কিভাবে গুম করা হয় মরদেহ। জিহাদ হাওলাদারও জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান শাহীন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই হাওলাদারসহ আরও চার বাংলাদেশি নাগরিক এমপি আনারকে নিউ টাউন অ্যাপার্টমেন্টে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। এরপর কেটে টুকরো টুকরো করা হয় মরদেহ। ব্লিচিং পাউডার দিয়ে মুছে ফেলা হয় পুরো ফ্লোর। কিন্তু এরপরও রয়ে যায় কিছু রক্তের দাগ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এমপি আনোয়ারুল আজীমের মরদেহের টুকরো ভর্তি প্যাকেটগুলো কলকাতার কোন কোন এলাকায় ফেলা হয়েছে? সেটা জানার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে দেদেশের পুলিশ। মরদেহের সন্ধানে এরইমধ্যে পোলেরহাট থানার কৃষ্ণবাটি সেতুর কাছে বাগজোলা খালে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আবাসিক কমপ্লেক্সের সামনের এই খালটিতে কোন কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি। আশা করা যাচ্ছে, আর কয়েকদিনের মধ্যেই একে একে বেরিয়ৈ আসবে সব রহস্য। তবে মার্কিন নাগরিক, এমপি আনারের ছোটবেলার বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহীনকে কি বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া সম্ভব হবে? এ প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।